Translate

Wednesday, March 5, 2025

|| অঙ্কন কথা || পর্ব - ৫

আমরা আগের পর্বেই আলোচনা করেছিলাম একজন শিল্পী বা অঙ্কন শিক্ষার্থীর কাছে সর্বদাই একটা ড্রয়িং প্যাড (খাতা) ও পেন্সিল থাকা অত্যন্ত জরুরী, যাতে আমরা যেকোন অবস্থাতে যেকোন জায়গায় স্কেচ বা ড্রয়িং করতে পারি। আমাদের ড্রয়িং এর দক্ষতা বাড়ানোর জন্য যারা প্রত্যহ ড্রয়িং এর অভ্যাস করে চলেছেন এবং ড্রয়িং এর দক্ষতা ও গতির উন্নতি করতে চান তাদের জন্য এই আলোচনা পর্ব। ড্রয়িং এর উন্নতি এবং তার দক্ষতা এবং গতি অর্জন করতে গেলে প্রত্যহ লাইফ ড্রয়িং প্র্যাকটিস করা উচিত (অর্থাৎ ব্যক্তিকে দেখে ড্রয়িং অভ্যাস করা)। অর্থাৎ বাড়ির আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব অথবা আমরা যখন বাইরে কোথাও যায় সেখানের মানুষজন বা কোনো বস্তু বা কোনো দৃশ্যকে দেখে লাইন ড্রয়িং এর অভ্যাস করা। এক্ষেত্রে শুধু সম্পূর্ণ কোনো মানুষের ড্রয়িং-ই নয় আমরা কোন মানুষের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গের ড্রয়িংও প্র্যাকটিস করতে পারি, যেমন মুখমণ্ডল (পোর্ট্রেট) হাত-পা ও আঙ্গুলের ড্রয়িং ইত্যাদিরও অভ্যাস করতে পারি। যখন এটা প্রত্যহ অভ্যাস করতে করতে আমাদের ড্রয়িং এর দক্ষতার কিছুটা উন্নতি ঘটবে এবং আমাদের ড্রয়িং আগের তুলনায় বেশ কিছুটা উন্নতি হবে তখন আমরা এই ড্রয়িং আরো দ্রুত কিভাবে আঁকা যায় তার চেষ্টা করব, একে বলা হয় র‍্যাপিড স্কেচ। অর্থাৎ আমরা কোন অবজেক্ট এর পুঙ্খানুপুঙ্খ ড্রয়িং না করে কয়েকটা লাইনের মাধ্যমে সেই অবজেক্ট এর অভিব্যক্তিকে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা। এই ড্রয়িং আমরা কোনো বাজারে গিয়ে একটা নির্দিষ্ট জায়গায় বসে, ট্রেনে যেতে যেতে বা কোন স্টেশনে বসেও আমরা করতে পারি অর্থাৎ এক্ষেত্রে যেটা হয় আমরা যাকে দেখে ড্রয়িং করছি তিনি অত্যন্ত কম সময়ে সেখানে অবস্থান করবেন, যার ফলে আমাদের বিস্তারিত আঁকা সম্ভব নয় অতএব কম লাইনের ব্যবহার করে আমরা সেই অবজেক্টকে দ্রুত আঁকার চেষ্টা করবো। এটাই হলো র‍্যাপিড স্কেচ। এই স্কেচের অভ্যাস আমাদের লাইন ড্রয়িংকে আরো দৃঢ় করে তুলবে। প্রথমে আমরা এক একটা চরিত্র ধরার চেষ্টা করব। যখন সেটা করতে করতে অভ্যাস হয়ে যাবে, তখন পরবর্তীকালে আমরা একটা পুরো কম্পোজিশন ধরার চেষ্টা করতে পারি। যেমন - কোন বাজার, টেশনের ভিড়, চায়ের দোকান ইত্যাদি আমরা খুব দ্রুত ও কম সংখ্যক লাইনের মাধ্যমে আঁকার চেষ্টা করব।

(Content subject to copyright)

নিচে উদাহরন স্বরূপ দুটি ছবি দেয়া হল। প্রথমটি হল পূর্ণ ড্রয়িং এবং দ্বিতীয়টি হল র‍্যাপিড স্কেচ।


 






No comments:

Featured Posts

রামকিঙ্কর বেইজ - আধুনিক ভাস্কর্যের পথপ্রদর্শক  রামকিঙ্কর বেইজ ছিলেন একজন ভারতীয় ভাস্কর এবং চিত্রশিল্পী, আধুনিক ভারতীয় ভাস্কর্যের পথপ্রদর্শকদের একজন এবং প্রাসঙ্গিক আধুনিকতাবাদের একজন প্রধান ব্যক্তিত্ব।  বেইজ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলায় অর্থনৈতিকভাবে বিনয়ী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।  কিশোর বয়সে রামকিঙ্কর ভারতের ব্রিটিশ শাসকদের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনে জড়িত ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামীদের প্রতিকৃতি আঁকতেন।  16 বছর বয়সে তিনি প্রখ্যাত সাংবাদিক রামানন্দ চ্যাটার্জির নজরে পড়েন। চার বছর পর রামকিঙ্কর শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলার ছাত্র হিসেবে যোগ দেন।  বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিপ্লোমা অর্জনের পর তিনি ভাস্কর্য বিভাগের প্রধান হন।  রামকিঙ্করের বিখ্যাত ভাস্কর্য শিষ্যদের মধ্যে রয়েছে প্রভাস সেন, শঙ্খো চৌধুরী, অবতার সিং পানওয়ার, মদন ভাটনগর, ধর্মানি, বলবীর সিং কাট্ট, রাজুল ধারিয়াল এবং সুসান ঘোস একটি ছোট ছেলে হিসাবে, তিনি স্থানীয় কারিগর এবং চিত্র-নির্মাতাদের কাজের সময় দেখে বড় হয়েছিলেন;  এবং তার পথে যা আসে তা দিয়ে ছোট মাটির চিত্র এবং পেইন্টিং তৈরি করে। 1938 সালে শান্তিনিকেতনে তৈরি "সাঁওতাল পরিবার"  এটি তাকে 1925 সালে, জাতীয়তাবাদী প্রকাশক এবং নতুন ভারতীয় শিল্প আন্দোলনের জন্য রামানন্দ চ্যাটার্জির পরামর্শে শান্তিনিকেতনের আর্ট স্কুল কলা ভাবনায় তার পথ চিহ্নিত করতে পরিচালিত করেছিল।  শান্তিনিকেতনে, নন্দলাল বোসের নির্দেশনায় এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দ্বারা আকৃতির মুক্ত বৌদ্ধিক পরিবেশের দ্বারা উৎসাহিত হয়ে, তাঁর শৈল্পিক দক্ষতা এবং বুদ্ধিবৃত্তিক দিগন্ত নতুন গভীরতা এবং জটিলতা অর্জন করে।  কলা ভবনে পড়াশোনা শেষ করার পর শীঘ্রই তিনি এর অনুষদের সদস্য হন এবং নন্দলাল এবং বিনোদ বিহারী মুখার্জির সাথে শান্তিনিকেতনকে স্বাধীনতা-পূর্ব ভারতে আধুনিক শিল্পের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে পরিণত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।  তিরিশের দশকের গোড়ার দিকে তিনি ক্যাম্পাসকে একের পর এক ভাস্কর্যে ভরিয়ে দিতে শুরু করেন, যা বিষয়বস্তুতে উদ্ভাবনী এবং ব্যক্তিগত শৈলীতেও ছিল। এই ধারায় তাঁর প্রথম শ্রেষ্ঠ রচনা ছিল 1938 সালে করা সাঁওতাল পরিবার। এই বৃহত্তর জীবন ভাস্কর্যে তিনি এই অঞ্চলের উপজাতীয় কৃষকদের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন, চিত্রগুলিকে আইকনিক উপস্থিতি এবং মর্যাদাপূর্ণ অনুগ্রহ প্রদান করেছিলেন যা এখনও পর্যন্ত ঈশ্বর এবং শাসকদের চিত্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। সিমেন্ট এবং ল্যাটারাইট মর্টার ব্যবহার করে চিত্রগুলিকে মডেল করা, এবং একটি ব্যক্তিগত শৈলীর ব্যবহার যাতে আধুনিক পশ্চিমা এবং ভারতীয় প্রাক-শাস্ত্রীয় ভাস্কর্যের মূল্যবোধগুলিকে একত্রিত করা হয়েছিল।  এই মৌলিক কাজের মাধ্যমে রামকিঙ্কর নিজেকে নিঃসন্দেহে আধুনিক ভারতীয় ভাস্কর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন।  ঋত্বিক ঘটক বিচক্ষণতার সাথে বেইজের উপর 'রামকিঙ্কর' (1975) নামে একটি তথ্যচিত্র তৈরি করেছিলেন যেখানে তিনি তাকে একজন রাজনৈতিক আইকন হিসেবে তুলে ধরেন।  2012 সালে ভাস্কর কে.এস.  রাধাকৃষ্ণান দিল্লির ন্যাশনাল গ্যালারি অফ মডার্ন আর্ট-এ রামকিঙ্করের একটি গ্র্যান্ড রেট্রোস্পেকটিভ কিউরেট করেছেন।  রামকিঙ্কর বাইজ (বই), বিশিষ্ট শিল্প ইতিহাসবিদ অধ্যাপক আর. শিব কুমারের বইটি রামকিঙ্কর বাইজের সবচেয়ে ব্যাপক গ্রন্থ বলে মনে করা হয়।   তথ্যসূত্র : Wikipedia, Google.  "(ছবি Google থেকে সংগৃহীত) পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। শিল্প ইতিহাসের আরও নতুন নতুন বিষয় নিয়ে আরও লেখা এই ব্লগ নিয়মিত পাবেন। তাই নিয়মিত আমাদের ব্লগ Follow করুন।

    অযোধ্যা, রাম জন্মভূমি (প্রভু শ্রীরামের জন্মস্থান), দৈব শক্তি অনুভব করার জন্য একটি দুর্দান্ত জায়গা এবং বিশ্বাস করা হয় যে এটি ঈশ্বর নিজে...

Popular Posts