Translate

Wednesday, February 12, 2025

।। অঙ্কন কথা ।। - পর্ব -১






'ছবি আঁকা মানে সর্বদা এই নয় যে একটা খুব পরিপাটি সুন্দর জিনিসই আঁকতে হবে। অনেকেই মনে করেন পেইন্টিং মনে সুন্দর দৃশ্য, সুন্দর মুখ। সেটা সবসময় নাও হতে পারে। আপনি পৃথিবীটাকে কিভাবে দেখছেন, তার ভিত্তিতেও কাজে পরিবর্তন আসতে পারে। প্রাথমিক পর্বে আমরা সকলেই সুন্দর ভাবে ড্রয়িং, ছবি শিখি বা করি। আমি শুধু আর্ট কলেজের স্টুডেন্টদের কথা বলছি না যারা এখনও স্কুল জীবনে আছেন এবং ছবি আঁকেন তাদেরও বলছি। ছবি মানে একটা শিল্প একটা সৃষ্টি। ছবির মাধ্যমে আমরা অনেক কিছু প্রকাশ করতে পারি, একটা নতুন সৃষ্টি করতে পারি, যেটা হবে সবার থেকে আলাদা। তাই আমি নিজে নতুন কি সৃষ্টি করলাম সেটাই সর্বদা মাথায় রাখতে হবে। আমরা এতদিন যাবৎ যে যে বিষয় বা বস্তু এঁকেছি বা শিখেছি সেই সব অবজেক্ট এর সাথে মনের ভাব একত্রিত করে নতুন কিছু একটা সৃষ্টি করা, সেখানে বিভিন্ন শিল্পীর বিষয় ও চিন্তা ভাবনা ভিন্ন হবে। অর্থাৎ কবি বা সাহিত্যিক তাঁর জীবনের গল্প বা বাস্তবিক জীবনের প্রতিক্রিয়া, প্রতিবাদ, আনন্দ, দুঃখ, সবকিছু তার লেখার মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলেন, ঠিক সেই ভাবেই ছবিতেও আমরা আমাদের ভাব প্রকাশ করতে পারি। সেক্ষেত্রে প্রতিটি শিল্পীর বিষয়, ছবির লাইন, রং, সারফেস আলাদা আলাদা হতে পারে। অর্থাৎ আমি আমার কাজের মধ্যে যেটা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করছি, সেটার ড্রয়িং, রং, টেক্সচার কিরকম করলে ভালো হবে সেটা আপনার বিষয় ও চিন্তাভাবনার ওপর নির্ভর করবে। এমনকি আপনার পেন্সিল ড্রয়িং, প্যাস্টেল, ওয়াটার কালার এর কাজেও নিজস্ব শৈলী আনতে পারেন, শুধুমাত্র একটু অভ্যাসের দ্বারা। আপনি বিভিন্ন বিখ্যাত শিল্পীর কাজও দেখতে পারেন, এবং তাদের কাজের বিষয় যদি আপনার চিন্তাভাবনার সাথে মেলে, তার কাজ থেকে আপনি অনুপ্রাণিত হতে পারেন এবং আপনি নতুন কিছু সৃষ্টি করতে পারেন। এরপর আপনি যেটা সৃষ্টি করবেন সেটা সম্পূর্ন আপনার নিজস্ব আর তখনই সেটা একটা প্রকৃত ছবি হয়ে ওঠবে।

।।পড়ার জন্য  অসংখ্য ধন্যবাদ।।

[Content subject to copyright.]

(Writer - Bachchu Chanda)

Masters of Fine Art, Kolkata

No comments:

Featured Posts

রামকিঙ্কর বেইজ - আধুনিক ভাস্কর্যের পথপ্রদর্শক  রামকিঙ্কর বেইজ ছিলেন একজন ভারতীয় ভাস্কর এবং চিত্রশিল্পী, আধুনিক ভারতীয় ভাস্কর্যের পথপ্রদর্শকদের একজন এবং প্রাসঙ্গিক আধুনিকতাবাদের একজন প্রধান ব্যক্তিত্ব।  বেইজ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলায় অর্থনৈতিকভাবে বিনয়ী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।  কিশোর বয়সে রামকিঙ্কর ভারতের ব্রিটিশ শাসকদের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনে জড়িত ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামীদের প্রতিকৃতি আঁকতেন।  16 বছর বয়সে তিনি প্রখ্যাত সাংবাদিক রামানন্দ চ্যাটার্জির নজরে পড়েন। চার বছর পর রামকিঙ্কর শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলার ছাত্র হিসেবে যোগ দেন।  বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিপ্লোমা অর্জনের পর তিনি ভাস্কর্য বিভাগের প্রধান হন।  রামকিঙ্করের বিখ্যাত ভাস্কর্য শিষ্যদের মধ্যে রয়েছে প্রভাস সেন, শঙ্খো চৌধুরী, অবতার সিং পানওয়ার, মদন ভাটনগর, ধর্মানি, বলবীর সিং কাট্ট, রাজুল ধারিয়াল এবং সুসান ঘোস একটি ছোট ছেলে হিসাবে, তিনি স্থানীয় কারিগর এবং চিত্র-নির্মাতাদের কাজের সময় দেখে বড় হয়েছিলেন;  এবং তার পথে যা আসে তা দিয়ে ছোট মাটির চিত্র এবং পেইন্টিং তৈরি করে। 1938 সালে শান্তিনিকেতনে তৈরি "সাঁওতাল পরিবার"  এটি তাকে 1925 সালে, জাতীয়তাবাদী প্রকাশক এবং নতুন ভারতীয় শিল্প আন্দোলনের জন্য রামানন্দ চ্যাটার্জির পরামর্শে শান্তিনিকেতনের আর্ট স্কুল কলা ভাবনায় তার পথ চিহ্নিত করতে পরিচালিত করেছিল।  শান্তিনিকেতনে, নন্দলাল বোসের নির্দেশনায় এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দ্বারা আকৃতির মুক্ত বৌদ্ধিক পরিবেশের দ্বারা উৎসাহিত হয়ে, তাঁর শৈল্পিক দক্ষতা এবং বুদ্ধিবৃত্তিক দিগন্ত নতুন গভীরতা এবং জটিলতা অর্জন করে।  কলা ভবনে পড়াশোনা শেষ করার পর শীঘ্রই তিনি এর অনুষদের সদস্য হন এবং নন্দলাল এবং বিনোদ বিহারী মুখার্জির সাথে শান্তিনিকেতনকে স্বাধীনতা-পূর্ব ভারতে আধুনিক শিল্পের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে পরিণত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।  তিরিশের দশকের গোড়ার দিকে তিনি ক্যাম্পাসকে একের পর এক ভাস্কর্যে ভরিয়ে দিতে শুরু করেন, যা বিষয়বস্তুতে উদ্ভাবনী এবং ব্যক্তিগত শৈলীতেও ছিল। এই ধারায় তাঁর প্রথম শ্রেষ্ঠ রচনা ছিল 1938 সালে করা সাঁওতাল পরিবার। এই বৃহত্তর জীবন ভাস্কর্যে তিনি এই অঞ্চলের উপজাতীয় কৃষকদের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন, চিত্রগুলিকে আইকনিক উপস্থিতি এবং মর্যাদাপূর্ণ অনুগ্রহ প্রদান করেছিলেন যা এখনও পর্যন্ত ঈশ্বর এবং শাসকদের চিত্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। সিমেন্ট এবং ল্যাটারাইট মর্টার ব্যবহার করে চিত্রগুলিকে মডেল করা, এবং একটি ব্যক্তিগত শৈলীর ব্যবহার যাতে আধুনিক পশ্চিমা এবং ভারতীয় প্রাক-শাস্ত্রীয় ভাস্কর্যের মূল্যবোধগুলিকে একত্রিত করা হয়েছিল।  এই মৌলিক কাজের মাধ্যমে রামকিঙ্কর নিজেকে নিঃসন্দেহে আধুনিক ভারতীয় ভাস্কর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন।  ঋত্বিক ঘটক বিচক্ষণতার সাথে বেইজের উপর 'রামকিঙ্কর' (1975) নামে একটি তথ্যচিত্র তৈরি করেছিলেন যেখানে তিনি তাকে একজন রাজনৈতিক আইকন হিসেবে তুলে ধরেন।  2012 সালে ভাস্কর কে.এস.  রাধাকৃষ্ণান দিল্লির ন্যাশনাল গ্যালারি অফ মডার্ন আর্ট-এ রামকিঙ্করের একটি গ্র্যান্ড রেট্রোস্পেকটিভ কিউরেট করেছেন।  রামকিঙ্কর বাইজ (বই), বিশিষ্ট শিল্প ইতিহাসবিদ অধ্যাপক আর. শিব কুমারের বইটি রামকিঙ্কর বাইজের সবচেয়ে ব্যাপক গ্রন্থ বলে মনে করা হয়।   তথ্যসূত্র : Wikipedia, Google.  "(ছবি Google থেকে সংগৃহীত) পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। শিল্প ইতিহাসের আরও নতুন নতুন বিষয় নিয়ে আরও লেখা এই ব্লগ নিয়মিত পাবেন। তাই নিয়মিত আমাদের ব্লগ Follow করুন।

    অযোধ্যা, রাম জন্মভূমি (প্রভু শ্রীরামের জন্মস্থান), দৈব শক্তি অনুভব করার জন্য একটি দুর্দান্ত জায়গা এবং বিশ্বাস করা হয় যে এটি ঈশ্বর নিজে...

Popular Posts