Translate

Saturday, March 8, 2025

ভারতীয় শিল্প ও তার প্রাণবন্ত ইতিহাস || পর্ব - ১ ||

 




 

প্রারম্ভিক পেট্রোগ্লিফস্ (Petroglyphs) থেকে একটি সমৃদ্ধ সমসাময়িক শিল্প দৃশ্য পর্যন্ত, ভারতের প্রাণবন্ত শৈল্পিক উত্তরাধিকারই হল বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক প্রভাবের ফলস্বরূপ।  এই অঞ্চলের শিল্পের বৈচিত্র্য - যার মধ্যে আধুনিক ভারত, বাংলাদেশ, এবং পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের ঐতিহাসিক অঞ্চলে সৃষ্ট যা কিছু রয়েছে - সেগুলি বিভিন্ন সভ্যতার প্রতিনিধিত্বকারী জীবন্ত, স্বতন্ত্র এবং মন্ত্রমুগ্ধ শৈলীতে প্রতিফলিত হয়।

 

 কারণ বিশ্বের কিছু প্রধান ধর্ম যেমন বৌদ্ধ ধর্ম, হিন্দুধর্ম এবং ইসলাম হয় ভারতে শুরু হয়েছে বা বিকাশ লাভ করেছে, ভারতীয় শিল্পের বেশিরভাগই ধর্মীয় বা রাজনৈতিক বিষয়ের উপর ভিত্তি করে।  এখানে, আমরা ভারতীয় লোক চিত্রকলা, স্থাপত্য এবং ভাস্কর্যের ইতিহাস উন্মোচন করি এবং ব্যাখ্যা করি যে কীভাবে প্রতিটি আর্থ-রাজনৈতিক প্রভাব থেকে উদ্ভূত হয়েছিল সেই সময়ের প্রতিফলন থেকে।

 

ভারতীয় শিল্পের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

 

প্রত্নতাত্ত্বিকরা এই অঞ্চলে প্রাগৈতিহাসিক শিলা শিল্পের প্রমাণ খুঁজে পেয়েছেন—যেখানে গুহার শিলায় খোদাই করা বা অঙ্কন করা হয়েছে— সেগুলিঅন্তত ২৯০,০০০ বছর আগের। একটি প্রাচীনতম উদাহরণ হল মধ্য ভারতে পাওয়া ভীমবেটকা পেট্রোগ্লিফস্ (Bhimbetka petroglyphs) ।  এগুলির মধ্যে রয়েছে কাপুলস, যা অ-উপযোগী সংক্রান্ত গোলার্ধীয় কাপ-আকৃতির এবং যা পাথরের পৃষ্ঠ থেকে হাতুড়ি দ্বারা তৈরি করা হয়।  প্যালিওলিথিক, মেসোলিথিক এবং নিওলিথিক যুগে এই ধরনের রক (Rock) আর্ট ছিল গুহাচিত্রের প্রাথমিক রূপ, যা প্রায়শই প্রাণী এবং মানুষের রূপকে চিত্রিত করে।

 

  প্রাচীনতম ভারতীয় শিল্প ভাস্কর্যগুলি ২,৫০০ এবং ১,৮০০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দের মধ্যে সিন্ধু সভ্যতা দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। তারা ছোট পোড়ামাটি এবং ব্রোঞ্জের মূর্তি তৈরি করেছিল যেমন গরু এবং বানরের, যা মানুষ এবং পশুদের প্রতিনিধিত্ব করে।  খ্রিস্টপূর্ব  ৬ষ্ঠ শতাব্দীতে, বৌদ্ধ ধর্মের উত্থান ধর্মীয়-থিমযুক্ত শিল্পের জন্য পথ প্রশস্ত করেছিল, পাথর এবং ব্রোঞ্জের ভাস্কর্যের আকারে।  এই সময়ে, ধর্মীয় শিল্পীরা পাথরে খোদাই করা এবং গ্রীক-প্রভাবিত কলাম দিয়ে সজ্জিত বিশাল মন্দির তৈরির সাথেও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন।

 

  ভারতীয় বৌদ্ধ ও হিন্দুদের মধ্যে ভাস্কর্য একটি সাধারণ রীতি ছিল।  হিন্দুধর্ম শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ভারতীয় শিল্পের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু হিসাবে অবিরত ছিল, কারণ শিবের মতো দেবদেবীর ভাস্কর্য সাধারণত তৈরি করা হত।  ১৬ শতকের মধ্যে, মুঘল সাম্রাজ্যের অধীনে ইসলাম গুরুত্ব পায় এবং ইসলামী শাসকদের অধীনে শিল্প উৎপাদন বৃদ্ধি পায়।  এই সময়ে, শিল্পকলার উন্নতি ঘটে এবং ১৬৩১ সালে তাজমহলের নির্মাণ শুরু হয়।

 

  ভারতে ব্রিটিশদের সম্পৃক্ততা ১৮ শতকে শুরু হয়েছিল, সেই সময়ে তারা ইউরোপীয় শৈলীর প্রচারের জন্য আর্ট স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছিল।  ফলস্বরূপ, স্থানীয় শিল্প শৈলীগুলি বিদেশী প্রভাবের সাথে মিশে যায় এবং ঐতিহ্যগত শিল্প ফর্মগুলি রোমান্টিক বা অতিরঞ্জিত হয়ে ওঠে ইউরোপীয় ক্রেতাদের আহ্বান জানানোর জন্য।  ১৯৪৭ সালে, ভারত ব্রিটিশ সাম্রাজ্য থেকে স্বাধীনতা লাভ করে যা স্থানীয় শিল্পীদের একটি নতুন শৈলীর সন্ধানে ঠেলে দেয়।  সমসাময়িক ভারতীয় শিল্প ঐতিহ্যগত উপাদান এবং দেশের সমৃদ্ধ ইতিহাসের প্রভাবকে অন্তর্ভুক্ত করে।

 

Thursday, March 6, 2025

|| অঙ্কন কথা || পর্ব - ৬

|| মাধ্যম জলরঙ ||

জলরঙ (Water colour) এমন একটি মাধ্যম যার দ্বারা খুব শীঘ্রই কোনো চিত্র ফুটিয়ে তোলা সম্ভব। এই মাধ্যমের দ্বারা কোনো বিষয়কে পরিপূর্ণ খুঁটিনাটি না ধরেই খুব সহজেই সুন্দর রূপে ফুটিয়ে তোলা যায়। তারজন্য চাই অভ্যাস ও ধৈর্য। যেকোনো বিষয়কে নিজের আয়ত্তে নিয়ে আসতে গেলে অভ্যাস ও ধৈর্যের প্রয়োজন হয়।এই জলরঙের পেপার নির্বাচন একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাজারে যে সমস্ত ড্রয়িং খাতা পাওয়া যায় সেগুলি শুরুতে জলরঙ প্র্যাকটিসের জন্য ঠিক আছে কিন্তু তাতে উপযুক্ত জলরঙের ছবি ঠিক ভাবে আঁকা যায় না। এই ধরনের পেপারের জল ধারণ ক্ষমতা খুবই কম থাকে আর তাছাড়া এই পেপার আমরা যতই রং দিই সেই তুলনায় তার উজ্জ্বলতা আসেই না। যার ফলে ছবির সৌন্দর্য্য কমে যায়। তাই জলরঙ করার জন্য আমদের উপযুক্ত কাগজ কেনা জরুরি। কিন্তু উপযুক্ত কাগজ পাবো কোথায়? এটা একটা প্রশ্ন। যাদের বাড়ি কলকাতার আশেপাশে তারা কোনো প্রসিদ্ধ আর্ট এর দোকান থেকে তা সংগ্রহ করতে পারে। এই জলরঙের কাগজের গুণমান অনুযায়ী মূল্য কম বেশি হয়। তবে এই ধরণের পেপার গুলিতে কমবেশি ভালোই কাজ করা যায়। যাদের বাড়ির আশেপাশে এই ধরনের পেপার সংগ্রহ করার উপযুক্ত কোন দোকান নেই, তারা অনলাইনে এই পেপার অর্ডার করতে পারেন। সেখানে আপনি সাইজ A4 থেকে ফুল সিটের কাগজ পেয়ে যাবেন। এরপর বিষয় হল রঙ। মার্কেটে জলরঙের দুটি বিকল্প পাওয়া যায় একটা স্টুডেন্ট ওয়াটার কালার অপরটি হল আর্টিস্ট ওয়াটার কালার। আর্টিস্ট ওয়াটার কালারের দাম একটু বেশি হলেও জলরঙের আসল মজা ও তার বিশেষ ধর্ম স্বচ্ছতাকে ঠিকভাবে বুঝতে গেলে আমাদের ওটাই সংগ্রহ করতে হবে। আর ব্রাশের (তুলি) ক্ষেত্রেও তাও আমরা অফলাইনে অথবা অনলাইন থেকে তা সংগ্রহ করতে পারি। প্রয়োজন অনুযায়ী কয়েকটা রাউন্ড ব্রাশ আর একটা বা দুটি ফ্ল্যাট ব্রাশ (১ ইঞ্চি, ১/২ ইঞ্চি)।

 

(Content subject to copyright)





Wednesday, March 5, 2025

|| অঙ্কন কথা || পর্ব - ৫

আমরা আগের পর্বেই আলোচনা করেছিলাম একজন শিল্পী বা অঙ্কন শিক্ষার্থীর কাছে সর্বদাই একটা ড্রয়িং প্যাড (খাতা) ও পেন্সিল থাকা অত্যন্ত জরুরী, যাতে আমরা যেকোন অবস্থাতে যেকোন জায়গায় স্কেচ বা ড্রয়িং করতে পারি। আমাদের ড্রয়িং এর দক্ষতা বাড়ানোর জন্য যারা প্রত্যহ ড্রয়িং এর অভ্যাস করে চলেছেন এবং ড্রয়িং এর দক্ষতা ও গতির উন্নতি করতে চান তাদের জন্য এই আলোচনা পর্ব। ড্রয়িং এর উন্নতি এবং তার দক্ষতা এবং গতি অর্জন করতে গেলে প্রত্যহ লাইফ ড্রয়িং প্র্যাকটিস করা উচিত (অর্থাৎ ব্যক্তিকে দেখে ড্রয়িং অভ্যাস করা)। অর্থাৎ বাড়ির আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব অথবা আমরা যখন বাইরে কোথাও যায় সেখানের মানুষজন বা কোনো বস্তু বা কোনো দৃশ্যকে দেখে লাইন ড্রয়িং এর অভ্যাস করা। এক্ষেত্রে শুধু সম্পূর্ণ কোনো মানুষের ড্রয়িং-ই নয় আমরা কোন মানুষের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গের ড্রয়িংও প্র্যাকটিস করতে পারি, যেমন মুখমণ্ডল (পোর্ট্রেট) হাত-পা ও আঙ্গুলের ড্রয়িং ইত্যাদিরও অভ্যাস করতে পারি। যখন এটা প্রত্যহ অভ্যাস করতে করতে আমাদের ড্রয়িং এর দক্ষতার কিছুটা উন্নতি ঘটবে এবং আমাদের ড্রয়িং আগের তুলনায় বেশ কিছুটা উন্নতি হবে তখন আমরা এই ড্রয়িং আরো দ্রুত কিভাবে আঁকা যায় তার চেষ্টা করব, একে বলা হয় র‍্যাপিড স্কেচ। অর্থাৎ আমরা কোন অবজেক্ট এর পুঙ্খানুপুঙ্খ ড্রয়িং না করে কয়েকটা লাইনের মাধ্যমে সেই অবজেক্ট এর অভিব্যক্তিকে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা। এই ড্রয়িং আমরা কোনো বাজারে গিয়ে একটা নির্দিষ্ট জায়গায় বসে, ট্রেনে যেতে যেতে বা কোন স্টেশনে বসেও আমরা করতে পারি অর্থাৎ এক্ষেত্রে যেটা হয় আমরা যাকে দেখে ড্রয়িং করছি তিনি অত্যন্ত কম সময়ে সেখানে অবস্থান করবেন, যার ফলে আমাদের বিস্তারিত আঁকা সম্ভব নয় অতএব কম লাইনের ব্যবহার করে আমরা সেই অবজেক্টকে দ্রুত আঁকার চেষ্টা করবো। এটাই হলো র‍্যাপিড স্কেচ। এই স্কেচের অভ্যাস আমাদের লাইন ড্রয়িংকে আরো দৃঢ় করে তুলবে। প্রথমে আমরা এক একটা চরিত্র ধরার চেষ্টা করব। যখন সেটা করতে করতে অভ্যাস হয়ে যাবে, তখন পরবর্তীকালে আমরা একটা পুরো কম্পোজিশন ধরার চেষ্টা করতে পারি। যেমন - কোন বাজার, টেশনের ভিড়, চায়ের দোকান ইত্যাদি আমরা খুব দ্রুত ও কম সংখ্যক লাইনের মাধ্যমে আঁকার চেষ্টা করব।

(Content subject to copyright)

নিচে উদাহরন স্বরূপ দুটি ছবি দেয়া হল। প্রথমটি হল পূর্ণ ড্রয়িং এবং দ্বিতীয়টি হল র‍্যাপিড স্কেচ।


 






Saturday, March 1, 2025

|| অঙ্কন কথা || পর্ব - ৪





ড্রয়িং ইম্প্রুভ (উন্নতি) কিভাবে করব?

 

ড্রয়িং ইম্প্রুভ (উন্নতি) করার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি হলো প্রতিনিয়ত স্কেচ বা ড্রয়িং প্র্যাকটিস করা। আমরা যদি প্রতিনিয়ত স্কেচ করি তাহলে আমাদের ড্রইং এর দক্ষতা ইমপ্রুভ হবে এবং আমাদের ড্রইং এর লাইন আরো দৃঢ় হবে। তারজন্য একজন আর্টিস্টের কাছে সর্বদাই কয়েকটা পেন্সিল আর একটা ড্রয়িং প্যাড থাকা অত্যাবশ্যক। আমরা যেখানেই যায় না কেন কোথাও ঘুরতে বা বেড়াতে সেখানে আমরা আমাদের সাথে ড্রয়িংপ্যাড ও পেন্সিল নিয়ে যেতে পারি এবং আশে পাশের মানুষজন ও প্রকৃতির বিষয় অভ্যাস করতে পারি। আমরা যত বেশি পেন্সিল ব্যবহার করব আমাদের ড্রইং এর লাইন তত বেশি ইম্প্রুভ হবে। স্কেচ এমন একটি পদ্ধতি যেটা আমরা যেখানে ইচ্ছা করতে পারি, এমনকি  বাসে বা ট্রেনে যাত্রা করার সময় এক একটা অবজেক্টকে নিজের ড্রইং প্যাডে খুব শীঘ্রই এঁকে ফেলতে পারি, প্রথম প্রথম একটু অসুবিধা হলেও প্র্যাকটিস করার সাথে সাথে ড্রইং এর স্পিড এবং যে কোন অবজেক্টকে খুব শীঘ্র ধরে ফেলার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। তাই যারা ছবি আঁকা শিখছেন এবং ছবি আঁকেকে আরো ইম্প্রুভ করতে চান তাহলে আপনার সাথে সর্বদা একটি পেন্সিল ও ড্রইং প্যাড অবশ্যই রাখবেন।

 

**পরবর্তী পর্বে আমরা খুব তাড়াতাড়ি কিভাবে কোন অবজেক্টকে কিভাবে স্কেচ করা হয় সে বিষয়ে আলোচনা করব।

[Content subject to copyright]

Written by Bachchu Chanda (Master's of Fine Art, Kolkata)

 

Sunday, February 23, 2025

|| অঙ্কন কথা || পর্ব - ৩




প্রকৃতির বিভিন্ন দৃশ্য আমরা ওইখানে বসে আঁকতে পারি অথবা তার একটি ফটোগ্রাফি করে সেটা দেখে অথবা তার প্রিন্ট আউট বের করে আমরা আঁকতে পারি বিভিন্ন মিডিয়ামে যেমন- প্যাস্টেল, ওয়াটার কালার, ওয়েল ইত্যাদি।

 

প্রকৃতির কিরকম দৃশ্য আমাদের বিষয় হিসাবে নেব?

 

সেটা যে কোন ল্যান্ডস্কেপ হতে পারে যেমন গ্রামের কোন দৃশ্য, নদী-পুকুর,শহরের কোন দৃশ্য যেখানে আমরা ভূমিটাকে বেশি প্রাধান্য দেব। তাছাড়া আমরা কোন প্রাকৃতিক দৃশ্য হিসাবেও বিষয় নিতে পারি যেমন - কোন চায়ের দোকান, মাছের বাজার, সবজি বাজার ইত্যাদি বিভিন্ন দৃশ্য আমরা নিতে পারি।

 

প্রকৃতিতে বসে ল্যান্ডস্কেপ আঁকতে গেলে আমরা কিভাবে বুঝব যে আমাদের কতটা জিনিস আমাদের আঁকতে হবে?

 

কোন জায়গায় বসে প্রকৃতিকে আঁকতে গেলে আমরা বেশিরভাগ পেন্সিল স্কেচ, ওয়াটার কালার, পেন ইত্যাদি মিডিয়াম ব্যবহার করে থাকি যাতে সেটা খুব তাড়াতাড়ি আঁকা যায়। তাই বলে এই নয় যে অন্য মিডিয়ামেও আমরা আঁকতে পারবো না, সকল মিডিয়ামে প্রকৃতিতে বসে আঁকা সম্ভব। যখন আমার একটা ল্যান্ডস্কেপ করতে বসবো তখন আমরা কতটা আঁকবো বুঝে উঠতে পারিনা, তখন আমারা একটা জিনিস ব্যবহার করতে পারি। একটা ছোট আয়তক্ষেত্র কাগজ তার মাঝখানটা আয়তক্ষেত্র অনুযায়ী কেটে নিয়ে একটা ফ্রেমের মতো বানিয়ে নিতে পারি যাতে তার মধ্য দিয়ে দেখা যায় এবং যখন আমরা কোন ল্যান্ডস্কেপ আঁকতে বসবো তখন আমরা ওই ফ্রেমের মত কাগজটি বাঁ চোখের কাছে নিয়ে আসলে আমরা একটি ল্যান্ডস্কেপের মাপ পেয়ে যাব যে আমাকে কতটা বাদ দিতে হবে বা কতটা রাখতে হবে।

 

প্রকৃতির কোন কম্পোজিশন ওখানে বসে আঁকা সম্ভব?

 

হ্যাঁ ওখানে বসে আঁকা সম্ভব, তবে এই ক্ষেত্রে যে মিডিয়াম সবচেয়ে বেশি তাড়াতাড়ি ব্যবহার করা যায় সেটি ব্যবহার করতে হবে। কারণ যখন আমরা কোন দৃশ্যকে আঁকছি যেমন কোন  বাজারের দৃশ্য, সেখানে মানুষজন সর্বদা চলাফেরা করছে তাই সে ক্ষেত্রে যত দ্রুত আঁকা যায় সেরকম মিডিয়াম ব্যবহার করতে হবে। যেমন ওয়াটার কালার, পেন্সিল স্কেচ। তবে ফটোগ্রাফি করে বাড়িতে বসে কাজ করলেও আমরা অনেকক্ষণ সময় দিয়ে সে কাজ করতে পারি বিভিন্ন মিডিয়ামে।

 

বাড়িতে বসে আমরা যেকোনো মিডিয়ামে আর কি আঁকতে পারি?

 

বাড়িতে বসে স্টিল লাইফ আঁকতে পারি। আমরা যে কোন ফুলের ফুলের টব, ফুলদানি, বিভিন্ন ধরনের ফল এবং আরো মজাদার বিভিন্ন ধরনের জিনিস আমরা একটা সুন্দর কম্পোজিশন অনুযায়ী সাজিয়ে সেটি দেখে স্টাডি করতে পারি। এবং সুন্দরভাবে রঙের সাহায্যে ফুটিয়ে তুলতে পারি।

 

তাড়াতাড়ি স্কেচ করার পদ্ধতি কি?

 

আমাদের ড্রয়িং এর স্পিড বা স্কেচ করার পদ্ধতি উন্নত করার জন্য আমরা আমাদের বাড়ির যারা যারা রয়েছেন বা বাইরে আমরা যাদের দেখতে পাচ্ছি যারা বসে আছে বা হাঁটাচলা করছে তাদের খুব শিগগিরই স্কেচ করার অভ্যাস করতে পারি। এর ফলে আমাদের হাতে ড্রয়িং খুব দ্রুত উন্নতি হবে।

 

।।ধন্যবাদ।।

[Content subject to copyright.]

Written by Bachchu Chanda (Master's of Fine Art, Kolkata)

 .

Sunday, February 16, 2025

|| অঙ্কন কথা || পর্ব - ২







এই পর্ব আমাদের Intermediate চিত্রশিল্পী বা শিক্ষার্থীদের জন্য যারা প্যাস্টেল, ওয়াটার কালারের সাথে পরিচিত। আমরা যখন আঁকা শিখি, তখন আমাদের বাড়ির কাছাকাছি যে সব শিক্ষকরা আছেন তারা বিভিন্ন ড্রয়িং বই থেকে বিভিন্ন সিনারী আঁকতে দেন। আমরা সেটা থেকেই কপি করে থাকি। এটা শুরুতে ড্রয়িং শেখার জন্য ঠিক আছে। কিন্তু পরবর্তীতে প্রতিনিয়ত কপি করা একটা ভুল পদ্ধতি। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর দেখার দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন হয়। যে শিল্পীর বইটা থেকে আমরা কপি করছি তার সিনারী বা কম্পোজিশন, দেখার দৃষ্টিভঙ্গি, কালার, কন্সেপ্ট আলাদা। সেই শিল্পীও একটা প্রকৃতির কোন দৃশ্যকে সেখানে বসে বা তার ফটোগ্রাফী করে কাজ করছেন। সেক্ষেত্রে তিনি ওই প্রকৃতি কে তার চোখে তিনি যেভাবে দেখছেন সেভাবেই একেছেন। তাই আপনি দেখবেন বিভিন্ন বই এ বিভিন্ন শিল্পীর কাজ ও ড্রয়িং ভিন্ন, অতএব ওটা ওনাদের একজনের নিজস্ব শৈলী। সেটা দেখে কপি করলে আমরা নিজে কিছু শিখতে পারব না। কারণ তিনি সেখানে তার ড্রয়িং তার কালার তিনি করে সবকিছু করে দিয়েছেন। সেটা দেখে আঁকলে আমরা তাকে কপি করছি, তার কাজের স্টাইল আমারা অভ্যাস করে ফেলেছি। ফলে আমরা আমাদের নিজস্বতা হারিয়ে ফেলব এবং আমারা নতুন কিছু ভাবতে বা দেখতে পারবো না। ছবি আঁকা শেখার জন্য আমরা বিভিন্ন বড় বড় শিল্পীর কাজ গাইড হিসাবে দেখতে পারি। কিন্ত সেটা থেকে সবসময় হুবুহ কপি করার চেষ্টা করতে পারি না। হ্যা হয়ত কোন সময় একটু তার কাজ দেখে করতে ইচ্ছে করছে সেক্ষত্রে আপনি করতেই পারেন, তবে প্রতিনিয়ত না। সে ক্ষেত্রে আমরা যেটা করতে পারি সেটা হল আমরা কোন বাইরের দৃশ্য দেখে সেখানে বসে বা ফটোগ্রাফি করে সেটা দেখে ড্রয়িং ও কালার করতে পারি। এরফলে যে কাজটা তৈরি হবে সেটা হবে সম্পূর্ণ আমার নিজস্ব শৈলী। ফলে ধীরে ধীরে আমরা নিজেই প্রকৃতির রঙ, তার ড্রইয়িং এর সাথে পরিচিত হব। তার ফলে যেটা সৃষ্টি হবে সেটা সম্পূর্ন আপনার নিজস্ব একটা কাজ। একটা ছবি। এবং সেটা হবে অদ্বিতীয়।

Writing by Bachchu Chanda (Masters of Fine Art, kolkata)n

[Content subject to copyright.]

 

**প্রকৃতির কি কি জিনিস আমরা কিভাবে আঁকব সেটা পরবর্তী পর্বে আলোচনা করবো।

 

Wednesday, February 12, 2025

।। অঙ্কন কথা ।। - পর্ব -১






'ছবি আঁকা মানে সর্বদা এই নয় যে একটা খুব পরিপাটি সুন্দর জিনিসই আঁকতে হবে। অনেকেই মনে করেন পেইন্টিং মনে সুন্দর দৃশ্য, সুন্দর মুখ। সেটা সবসময় নাও হতে পারে। আপনি পৃথিবীটাকে কিভাবে দেখছেন, তার ভিত্তিতেও কাজে পরিবর্তন আসতে পারে। প্রাথমিক পর্বে আমরা সকলেই সুন্দর ভাবে ড্রয়িং, ছবি শিখি বা করি। আমি শুধু আর্ট কলেজের স্টুডেন্টদের কথা বলছি না যারা এখনও স্কুল জীবনে আছেন এবং ছবি আঁকেন তাদেরও বলছি। ছবি মানে একটা শিল্প একটা সৃষ্টি। ছবির মাধ্যমে আমরা অনেক কিছু প্রকাশ করতে পারি, একটা নতুন সৃষ্টি করতে পারি, যেটা হবে সবার থেকে আলাদা। তাই আমি নিজে নতুন কি সৃষ্টি করলাম সেটাই সর্বদা মাথায় রাখতে হবে। আমরা এতদিন যাবৎ যে যে বিষয় বা বস্তু এঁকেছি বা শিখেছি সেই সব অবজেক্ট এর সাথে মনের ভাব একত্রিত করে নতুন কিছু একটা সৃষ্টি করা, সেখানে বিভিন্ন শিল্পীর বিষয় ও চিন্তা ভাবনা ভিন্ন হবে। অর্থাৎ কবি বা সাহিত্যিক তাঁর জীবনের গল্প বা বাস্তবিক জীবনের প্রতিক্রিয়া, প্রতিবাদ, আনন্দ, দুঃখ, সবকিছু তার লেখার মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলেন, ঠিক সেই ভাবেই ছবিতেও আমরা আমাদের ভাব প্রকাশ করতে পারি। সেক্ষেত্রে প্রতিটি শিল্পীর বিষয়, ছবির লাইন, রং, সারফেস আলাদা আলাদা হতে পারে। অর্থাৎ আমি আমার কাজের মধ্যে যেটা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করছি, সেটার ড্রয়িং, রং, টেক্সচার কিরকম করলে ভালো হবে সেটা আপনার বিষয় ও চিন্তাভাবনার ওপর নির্ভর করবে। এমনকি আপনার পেন্সিল ড্রয়িং, প্যাস্টেল, ওয়াটার কালার এর কাজেও নিজস্ব শৈলী আনতে পারেন, শুধুমাত্র একটু অভ্যাসের দ্বারা। আপনি বিভিন্ন বিখ্যাত শিল্পীর কাজও দেখতে পারেন, এবং তাদের কাজের বিষয় যদি আপনার চিন্তাভাবনার সাথে মেলে, তার কাজ থেকে আপনি অনুপ্রাণিত হতে পারেন এবং আপনি নতুন কিছু সৃষ্টি করতে পারেন। এরপর আপনি যেটা সৃষ্টি করবেন সেটা সম্পূর্ন আপনার নিজস্ব আর তখনই সেটা একটা প্রকৃত ছবি হয়ে ওঠবে।

।।পড়ার জন্য  অসংখ্য ধন্যবাদ।।

[Content subject to copyright.]

(Writer - Bachchu Chanda)

Masters of Fine Art, Kolkata

Featured Posts

সখারাম গণেশ পণ্ডিত: এক ভারতীয় যিনি আমেরিকার বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে ইতিহাস লিখেছিলেন

ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় যখন আমাদের দেশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে লড়ছিল, তখন এক ভারতীয় যুবক হাজার মাইল দূরে আমেরিকায় বর্ণবৈষম্যের...

Popular Posts