Translate

Tuesday, September 19, 2023

কলাবৌ নিয়ে আমরা যেটা জানি || পর্ব - ২ ||



 

গণেশের স্ত্রী কলাবৌ? নবপত্রিকা আসলে কি?

প্রকাশনার তারিখ : ১৯শে সেপ্টেম্বর ২০২৩

INDOLOGY- একটি বিষয়।  তবে এখানে আসন্ন দিনগুলিতে স্বর্গীয় পৃথিবী সম্পর্কে কথা বলার জন্য............... অনুগ্রহ করে একজন অনুসরণকারী হন এবং অনুসরণ করার জন্য অন্যদের পরামর্শ দিন..........

দুর্গা পুজো আর বেশি দেরি নেই, আর মাত্র কয়েক দিনের অপেক্ষা। বাঙালীর শ্রেষ্ঠ উৎসবের অপেক্ষার দিন গোনা শুরু হয়ে গেছে। তবে তার আগে আসুন জেনে নিই একটা অত্যন্ত আকর্ষণীয় বিষয় সম্পর্কে। যেটা আমাদের মধ্যে অনেকেরই হয়তো জানা নেই।

সপ্তমীর সকালে এই নবপত্রিকার স্নান একটি উল্লেখযোগ্য বিষয়। গঙ্গা, পুকুর বা কোনও জলাশয়ে নবপত্রিকা স্নান করানো হয়। কলাবউ বা নবপত্রিকা স্নানের জন্য লাগে তেল-হলুদ, অষ্টকলস, পঞ্চরত্নের জল, পঞ্চ অমৃত, পঞ্চ শস্য, পঞ্চ গব্য, পঞ্চ কষায়, বৃষ্টির জল, ডাবের জল, শিশির, সমুদ্রের জল, তীর্থের জল, আখের রস, বরাহদন্ত মৃত্তিকা, বেশ্যাদ্বার মৃত্তিকা, সর্ব ঔষধি, মহা ঔষধি, চতুষ্পদ মৃত্তিকা, পদ্মরেণু, চন্দন। এই সমস্ত কিছু দিয়ে কলা বউকে স্নান করিয়ে অধিষ্ঠিত করা হয় গণেশের পাশে।

 কলাবৌ স্নান সেরে শুরু হয় সপ্তমীর পুজো। সপরিবারে থাকা দুর্গাপ্রতিমার ডানদিকে ঠিক গণেশ ঠাকুরের পাশে বসানো হয় কলাবৌকে। যা দেখে অনেকেরই মনে হয় গণেশের বউ হয়ত এই কলা বউ। কিন্তু আদতে সেই ধারণা একেবারেই ভুল। কলাবৌ আসলে দেবী দুর্গা। মা দুর্গার বৃক্ষরূপ এই কলাবৌ।

আক্ষরিক অর্থে নবপত্রিকার আক্ষরিক অর্থ ন'টি পাতা, তবে ন'টি গাছ নিয়ে নবপত্রিকা তৈরি করা হয়। এই ন'টি গাছ মা দুর্গার নয় শক্তির প্রতীক, এরমধ্যে রয়েছে- কদলী বা রম্ভা ( কলা গাছ ), কচু, হরিদ্রা ( হলুদ ), জয়ন্তী , বিল্ব( বেল ), দাড়িম্ব ( দাড়িম ), অশোক,মান ও ধান। এই নয় গাছ দেবীর যে নয় রূপকে বোঝায় সেই নয়টি রূপ হল-ব্রহ্মাণী, কালিকা, উমা, কার্তিকী, শিবা, রক্তদন্তিকা, শোকরহিতা, চামুন্ডা ও লক্ষী। এই নয় দেবী একত্রে "নবপত্রিকাবাসিনী নবদুর্গা" নামে "ॐ নবপত্রিকাবাসিন্যৈ নবদুর্গায়ৈ নমঃ" মন্ত্রে পূজিতা হন।

 সপত্র কলাগাছের সঙ্গে অপর আটটি পাতা-সহ গাছ একসঙ্গে দুটি বেলের সঙ্গে অপরাজিতা লতা দিয়ে বেঁধে লাল পাড় সাদা শাড়ি পড়িয়ে মাথায় সিঁদুর পড়িয়ে ঘোমটা দিয়ে নতুন বউয়ের আকারে সাজানো হয়। এরপর সেটা রাখা হয় গণেশ ঠাকুরের ডানদিকে।

দুর্গা পূজোর প্রথম দিন সপ্তমীর দিন সকালে পুরোহিত নিজেই নবপত্রিকা কে নিয়ে নিকটস্থ কোন নদী বা পুকুরে স্নান করাতে নিয়ে যান । সঙ্গে মহিলারা উলুধ্বনি ও শঙ্খধ্বনি করতে করতে যান, ঢাকীরাও ঢাক বাজাতে বাজাতে যান। নবপত্রিকা মণ্ডপে প্রবেশের পর দর্পণে দেবীর প্রতিবিম্ব স্থাপন করে মহাস্নান করানো হয়। এরপর বাকি দিনগুলিতে নবপত্রিকা সপরিবারে থাকা দেবী দুর্গার সঙ্গেই পূজিত হন। গবেষকরা মনে করেন, নবপত্রিকার পূজা আসলে শস্যদেবীর পূজা। যেখানে শস্যকেই বধূরূপে দেবীর প্রতীক হিসেবে পূজা করা হয়। আর, সেই থেকেই এসেছে কলাবৌ স্নানের প্রথা।

No comments:

Featured Posts

রামকিঙ্কর বেইজ - আধুনিক ভাস্কর্যের পথপ্রদর্শক  রামকিঙ্কর বেইজ ছিলেন একজন ভারতীয় ভাস্কর এবং চিত্রশিল্পী, আধুনিক ভারতীয় ভাস্কর্যের পথপ্রদর্শকদের একজন এবং প্রাসঙ্গিক আধুনিকতাবাদের একজন প্রধান ব্যক্তিত্ব।  বেইজ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলায় অর্থনৈতিকভাবে বিনয়ী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।  কিশোর বয়সে রামকিঙ্কর ভারতের ব্রিটিশ শাসকদের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনে জড়িত ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামীদের প্রতিকৃতি আঁকতেন।  16 বছর বয়সে তিনি প্রখ্যাত সাংবাদিক রামানন্দ চ্যাটার্জির নজরে পড়েন। চার বছর পর রামকিঙ্কর শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলার ছাত্র হিসেবে যোগ দেন।  বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিপ্লোমা অর্জনের পর তিনি ভাস্কর্য বিভাগের প্রধান হন।  রামকিঙ্করের বিখ্যাত ভাস্কর্য শিষ্যদের মধ্যে রয়েছে প্রভাস সেন, শঙ্খো চৌধুরী, অবতার সিং পানওয়ার, মদন ভাটনগর, ধর্মানি, বলবীর সিং কাট্ট, রাজুল ধারিয়াল এবং সুসান ঘোস একটি ছোট ছেলে হিসাবে, তিনি স্থানীয় কারিগর এবং চিত্র-নির্মাতাদের কাজের সময় দেখে বড় হয়েছিলেন;  এবং তার পথে যা আসে তা দিয়ে ছোট মাটির চিত্র এবং পেইন্টিং তৈরি করে। 1938 সালে শান্তিনিকেতনে তৈরি "সাঁওতাল পরিবার"  এটি তাকে 1925 সালে, জাতীয়তাবাদী প্রকাশক এবং নতুন ভারতীয় শিল্প আন্দোলনের জন্য রামানন্দ চ্যাটার্জির পরামর্শে শান্তিনিকেতনের আর্ট স্কুল কলা ভাবনায় তার পথ চিহ্নিত করতে পরিচালিত করেছিল।  শান্তিনিকেতনে, নন্দলাল বোসের নির্দেশনায় এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দ্বারা আকৃতির মুক্ত বৌদ্ধিক পরিবেশের দ্বারা উৎসাহিত হয়ে, তাঁর শৈল্পিক দক্ষতা এবং বুদ্ধিবৃত্তিক দিগন্ত নতুন গভীরতা এবং জটিলতা অর্জন করে।  কলা ভবনে পড়াশোনা শেষ করার পর শীঘ্রই তিনি এর অনুষদের সদস্য হন এবং নন্দলাল এবং বিনোদ বিহারী মুখার্জির সাথে শান্তিনিকেতনকে স্বাধীনতা-পূর্ব ভারতে আধুনিক শিল্পের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে পরিণত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।  তিরিশের দশকের গোড়ার দিকে তিনি ক্যাম্পাসকে একের পর এক ভাস্কর্যে ভরিয়ে দিতে শুরু করেন, যা বিষয়বস্তুতে উদ্ভাবনী এবং ব্যক্তিগত শৈলীতেও ছিল। এই ধারায় তাঁর প্রথম শ্রেষ্ঠ রচনা ছিল 1938 সালে করা সাঁওতাল পরিবার। এই বৃহত্তর জীবন ভাস্কর্যে তিনি এই অঞ্চলের উপজাতীয় কৃষকদের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন, চিত্রগুলিকে আইকনিক উপস্থিতি এবং মর্যাদাপূর্ণ অনুগ্রহ প্রদান করেছিলেন যা এখনও পর্যন্ত ঈশ্বর এবং শাসকদের চিত্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। সিমেন্ট এবং ল্যাটারাইট মর্টার ব্যবহার করে চিত্রগুলিকে মডেল করা, এবং একটি ব্যক্তিগত শৈলীর ব্যবহার যাতে আধুনিক পশ্চিমা এবং ভারতীয় প্রাক-শাস্ত্রীয় ভাস্কর্যের মূল্যবোধগুলিকে একত্রিত করা হয়েছিল।  এই মৌলিক কাজের মাধ্যমে রামকিঙ্কর নিজেকে নিঃসন্দেহে আধুনিক ভারতীয় ভাস্কর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন।  ঋত্বিক ঘটক বিচক্ষণতার সাথে বেইজের উপর 'রামকিঙ্কর' (1975) নামে একটি তথ্যচিত্র তৈরি করেছিলেন যেখানে তিনি তাকে একজন রাজনৈতিক আইকন হিসেবে তুলে ধরেন।  2012 সালে ভাস্কর কে.এস.  রাধাকৃষ্ণান দিল্লির ন্যাশনাল গ্যালারি অফ মডার্ন আর্ট-এ রামকিঙ্করের একটি গ্র্যান্ড রেট্রোস্পেকটিভ কিউরেট করেছেন।  রামকিঙ্কর বাইজ (বই), বিশিষ্ট শিল্প ইতিহাসবিদ অধ্যাপক আর. শিব কুমারের বইটি রামকিঙ্কর বাইজের সবচেয়ে ব্যাপক গ্রন্থ বলে মনে করা হয়।   তথ্যসূত্র : Wikipedia, Google.  "(ছবি Google থেকে সংগৃহীত) পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। শিল্প ইতিহাসের আরও নতুন নতুন বিষয় নিয়ে আরও লেখা এই ব্লগ নিয়মিত পাবেন। তাই নিয়মিত আমাদের ব্লগ Follow করুন।

    অযোধ্যা, রাম জন্মভূমি (প্রভু শ্রীরামের জন্মস্থান), দৈব শক্তি অনুভব করার জন্য একটি দুর্দান্ত জায়গা এবং বিশ্বাস করা হয় যে এটি ঈশ্বর নিজে...

Popular Posts