Translate

Thursday, September 21, 2023

কলাবৌ, গনেশ ও গনেশের পত্নীগণ || পর্ব - ৩ || অন্তিম পর্ব

।।  কলাবৌ, গনেশ ও গনেশের পত্নীগণ - এর সম্পূর্ন অজানা তথ্য ব্যাখ্যাসহ।। শ্রীরজতশুভ্র মুখোপাধ্যায় (শ্রীডক্টর)

প্রকাশনার তারিখ : ২২ শে সেপ্টেম্বর ২০২৩

  

 

INDOLOGY- একটি বিষয়।  তবে এখানে আসন্ন দিনগুলিতে স্বর্গীয় পৃথিবী সম্পর্কে কথা বলার জন্য............... অনুগ্রহ করে একজন অনুসরণকারী হন এবং অনুসরণ করার জন্য অন্যদের পরামর্শ দিন..........

 



 আদতে তিনি একম অদ্বিতীয়ম্।  আবার সৃষ্টির সার্থে ‌তিনি পুরুষ ও প্রকৃতি ভাবযুক্ত। বেদে সৃষ্টির বিষয়টা‌ সাধারণ পুরুষ ও প্রকৃতি সংযোগ নয়। পুরুষ বীজ দেয়। প্রকৃতি গর্ভবতী হয়ে ফল বা সন্তান উৎপাদন করে ঐ বীজ নিয়ে। এটা একটা রাসায়নিক বিক্রিয়ার দৃষ্টি নিয়ে দেখলে পুরুষ ও প্রকৃতি প্রতিটি বিক্রিয়ার সাপেক্ষ বদলে যাবে। এই উপপাদ্যটি বেদে ঋষিগণ সুন্দর করে প্রয়োগ করেছেন । যেমন, সূর্যের রশ্মি সমুদ্রের জল গরম করে। এখানে সূর্যের রশ্মি পুরুষ। সমুদ্রের জল প্রকৃতি। আবার ঐ জল বৃষ্টির ধারা হয়ে মাটিতে পড়ে। জল তখন পুরুষ। মাটি বা পৃথিবী হলো প্রকৃতি। এই উদাহরণ ঋষিগণ ঋক ও অথর্ব বেদে " অস্য বামস্য পালিত... ইত্যাদি সূক্তে  পুরুষ ও স্ত্রী সত্ত্বার কর্ম অনুসারে আপেক্ষিকত্ব দেখিয়েছেন।
○সুতরাং মা ,বাবা, স্ত্রী, সন্তান ইত্যাদি মনুষ্য সমাজের সম্পর্ক গুলো ঈশ্বরের জগতে আপেক্ষিক। কাজ ও গুণ অনুযায়ী তাই রুপ গুলো ধরা হয়। যেগুলো তার সর্বশক্তিমানতা ও লীলার প্রকাশ।
○আদিরও আদিতে কার কোলে কে বসে লীলা করেন ও কোন কল্যানের জন্য তা করেন, তা  একমাত্র লীলাময় জানেন।
○অথর্ব বেদের একাদশ খন্ডে "উচ্ছিষ্ট" শব্দ দিয়ে কবিতা ও তার পরেও ব্রহ্ম নিরুপনে আরও কয়েকটি কবিতা আছে। এই খানে বোঝা যায়, ইনি মহাগণপতি। তন্ত্র হল বেদের ক্রিয়াধারা। সেখানে এনাকে ও এনার শক্তিকে যুগপৎ আরাধনা করেন প্রাচীন ঋষিরা।
○এবার একটু বিজ্ঞানের চোখ দিয়ে দেখি।এই সূত্র গুলো পাঠ করলেই বোঝা যায়, এই যে ইউনিভার্স, এর যাবতীয় সবকিছু, এই উচ্ছিষ্ট গনেশের মন্ত্রে আলোচনা করা আছে। কিন্তু এইসব যাতে সমাহিত তিনি এন্টি ফোর্স কন্ট্রোল করে সব কিছু ব্যালেন্স করে ঋতময় ছন্দময় রেখেছেন‌ কিভাবে?
○এইখানে তন্ত্র স্ত্রী হিসেবে "রিদ্ধি", "সিদ্ধি" ও "বুদ্ধি" কে রেখেছেন। যাঁরা rhythmic o disciplinary world কে চালনা করেন। (শব্দগুলো ও তাদের অর্থ গুলো লক্ষ্য করুন। এই "শব্দ" ও অর্থ এবং তার ধ্বনী বা স্বন্ বা  স্বর বা রব্ বা ঘোষ -সেইখানেই বৈদিক, তান্ত্রিক ও সনাতনী মৌলিক সাহিত্য গুলির সব রহস্য, মৌলিকত্ব ও বিশেষত্ব লুকিয়ে আছে।) "বিঘ্নেশ্বরী" তার শক্তি। "বিঘ্নেশ্বরী" কেন?
○যখন ব্রহ্মান্ড আদিকণা দিয়ে ভরা ছিল,বোসন, ফার্মিয়ন ইত্যাদি, তখন এইগুলোর আয়ু তাৎক্ষণিক ছিল। পার্টিকেল ও এ্যান্টি পার্টিকেল দিয়ে ভরা। ফোর্স -এ্যান্টিফোর্স, ম্যাটার -অ্যান্টি ম্যাটার, ডার্ক ম্যাটার, এইসবে ভরা ছিল।
○কিন্তু এত বিষম স্পেসে সৃষ্টি ও বীজ কি করে আসবে?
○আদি ঈশ্বর তখন হয়েছেন প্রজাসৃসিক্ষু। এক দেহে দুই সত্ত্বা এল। পুরুষ ও স্ত্রী। হলেন অর্ধনারীশ্বর। এই স্ত্রী হলেন সন্তান পালনের জন্য ছন্দময়ী। রুপের সৃষ্টি হল নক্ষত্র ও গ্রহ ইত্যাদি সব হয়ে। কিন্তু যে বিশৃঙ্খল কণারা আছে, বিপরীত ধর্মী কণারা আছে, তাদেরও শক্তি আছে। ঐ শক্তি এই বিশ্বের সিস্টেমকে বিকল করে দেয়। বিঘ্ন ঘটায়। সেই শক্তির নিয়ন্ত্রন কিভাবে হল? সেই শক্তি আসেই বা কোথা থেকে?
○প্রাথমিক শক্তি ভাল ও মন্দ দুইতেই ভরা। সেখানে সৎ পুরুষ সুপ্ত। সৃষ্টির "ইক্ষা"ই ঐ শক্তির আদি। তিনিই সৎ পুরুষের মনকে পরিবর্তন ঘটিয়ে জাগিয়ে তোলেন। দুজন অর্ধনারীশ্বর হন। অর্থাৎ মুক্তশক্তি আদিরও আদি। ইনিই মহাবিষ্ণু বা মহাবৈষ্ণবী। তারই লীলা সৎ পুরুষের সাথে। আর তার থেকে জন্মায় অদ্বৈত রুপ।‌ ইনিই মহাগণপতি বা উচ্ছিষ্ট গনেশ বা বিঘ্নহর্তা গনেশ। যিনি‌ একদিকে যেমন সৎপুরুষের কাজকে সম্পূর্ণ করান অন্য দিকে তার অন্য শক্তি দিয়ে "বিঘ্নশক্তি"কে আগলে রাখেন বা নিয়ন্ত্রিত করেন।
○বিঘ্নহর্তা গণেশের এই অন্য শক্তিই হলেন "বিঘ্নেশ্বরী"।
○ কিভাবে? বিঘ্নশক্তিকে আনন্দে উন্মত্ত করে।
○সবচেয়ে তীব্র আনন্দ কিসে হয়? "কামে"। কিন্তু এই মৈথুনের শুরুই হয়েছে। এর পতন নেই। শেষ নেই। তাই এর সন্তানও নেই। শুধু বিঘ্নকারী শক্তিকে অন্য দিকে ভুলিয়ে রাখাই এর উদ্দেশ্য।
○কলাবৌয়ের উপাদান গুলির ওষধি গুণ আছে । ওষধিকে সোমরাজ্ঞী বলা হয়।
○ " যা ওষধি সোমরাজ্ঞী বর্হি শত বিচক্ষণা..."। এনারাই গণেশের শক্তি, সামর্থ্য, লাবন্য কে ভার্যার মতো ধরে রাখেন। যাতে নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে উচ্ছিষ্ট গনেশ বিঘ্ন শক্তির নিয়ন্ত্রন করতে পারেন।
○সেই ফাঁকে সৎ পুরুষ "সৃষ্টি" করে চলেন বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের সবকিছু। প্রকাশিত হয় মানুষের দল, ভক্তজন।
○উচ্ছিষ্ট কেন?
○থাক। পরে হবে।

ডাঃ রজতশুভ্র মুখোপাধ্যায়

ব্লগটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ, আশাকরি গনেশ ও কলাবৌ সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য আপনাদের জানাতে পেরেছি। আমাদের ব্লগ নিয়মিত Follow করুন আরও নতুন নতুন তথ্য জানার জন্য, যা শুধুমাত্র এই ব্লগেই আপনি পাবেন।।

 

No comments:

Featured Posts

রামকিঙ্কর বেইজ - আধুনিক ভাস্কর্যের পথপ্রদর্শক  রামকিঙ্কর বেইজ ছিলেন একজন ভারতীয় ভাস্কর এবং চিত্রশিল্পী, আধুনিক ভারতীয় ভাস্কর্যের পথপ্রদর্শকদের একজন এবং প্রাসঙ্গিক আধুনিকতাবাদের একজন প্রধান ব্যক্তিত্ব।  বেইজ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলায় অর্থনৈতিকভাবে বিনয়ী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।  কিশোর বয়সে রামকিঙ্কর ভারতের ব্রিটিশ শাসকদের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনে জড়িত ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামীদের প্রতিকৃতি আঁকতেন।  16 বছর বয়সে তিনি প্রখ্যাত সাংবাদিক রামানন্দ চ্যাটার্জির নজরে পড়েন। চার বছর পর রামকিঙ্কর শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলার ছাত্র হিসেবে যোগ দেন।  বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিপ্লোমা অর্জনের পর তিনি ভাস্কর্য বিভাগের প্রধান হন।  রামকিঙ্করের বিখ্যাত ভাস্কর্য শিষ্যদের মধ্যে রয়েছে প্রভাস সেন, শঙ্খো চৌধুরী, অবতার সিং পানওয়ার, মদন ভাটনগর, ধর্মানি, বলবীর সিং কাট্ট, রাজুল ধারিয়াল এবং সুসান ঘোস একটি ছোট ছেলে হিসাবে, তিনি স্থানীয় কারিগর এবং চিত্র-নির্মাতাদের কাজের সময় দেখে বড় হয়েছিলেন;  এবং তার পথে যা আসে তা দিয়ে ছোট মাটির চিত্র এবং পেইন্টিং তৈরি করে। 1938 সালে শান্তিনিকেতনে তৈরি "সাঁওতাল পরিবার"  এটি তাকে 1925 সালে, জাতীয়তাবাদী প্রকাশক এবং নতুন ভারতীয় শিল্প আন্দোলনের জন্য রামানন্দ চ্যাটার্জির পরামর্শে শান্তিনিকেতনের আর্ট স্কুল কলা ভাবনায় তার পথ চিহ্নিত করতে পরিচালিত করেছিল।  শান্তিনিকেতনে, নন্দলাল বোসের নির্দেশনায় এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দ্বারা আকৃতির মুক্ত বৌদ্ধিক পরিবেশের দ্বারা উৎসাহিত হয়ে, তাঁর শৈল্পিক দক্ষতা এবং বুদ্ধিবৃত্তিক দিগন্ত নতুন গভীরতা এবং জটিলতা অর্জন করে।  কলা ভবনে পড়াশোনা শেষ করার পর শীঘ্রই তিনি এর অনুষদের সদস্য হন এবং নন্দলাল এবং বিনোদ বিহারী মুখার্জির সাথে শান্তিনিকেতনকে স্বাধীনতা-পূর্ব ভারতে আধুনিক শিল্পের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে পরিণত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।  তিরিশের দশকের গোড়ার দিকে তিনি ক্যাম্পাসকে একের পর এক ভাস্কর্যে ভরিয়ে দিতে শুরু করেন, যা বিষয়বস্তুতে উদ্ভাবনী এবং ব্যক্তিগত শৈলীতেও ছিল। এই ধারায় তাঁর প্রথম শ্রেষ্ঠ রচনা ছিল 1938 সালে করা সাঁওতাল পরিবার। এই বৃহত্তর জীবন ভাস্কর্যে তিনি এই অঞ্চলের উপজাতীয় কৃষকদের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন, চিত্রগুলিকে আইকনিক উপস্থিতি এবং মর্যাদাপূর্ণ অনুগ্রহ প্রদান করেছিলেন যা এখনও পর্যন্ত ঈশ্বর এবং শাসকদের চিত্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। সিমেন্ট এবং ল্যাটারাইট মর্টার ব্যবহার করে চিত্রগুলিকে মডেল করা, এবং একটি ব্যক্তিগত শৈলীর ব্যবহার যাতে আধুনিক পশ্চিমা এবং ভারতীয় প্রাক-শাস্ত্রীয় ভাস্কর্যের মূল্যবোধগুলিকে একত্রিত করা হয়েছিল।  এই মৌলিক কাজের মাধ্যমে রামকিঙ্কর নিজেকে নিঃসন্দেহে আধুনিক ভারতীয় ভাস্কর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন।  ঋত্বিক ঘটক বিচক্ষণতার সাথে বেইজের উপর 'রামকিঙ্কর' (1975) নামে একটি তথ্যচিত্র তৈরি করেছিলেন যেখানে তিনি তাকে একজন রাজনৈতিক আইকন হিসেবে তুলে ধরেন।  2012 সালে ভাস্কর কে.এস.  রাধাকৃষ্ণান দিল্লির ন্যাশনাল গ্যালারি অফ মডার্ন আর্ট-এ রামকিঙ্করের একটি গ্র্যান্ড রেট্রোস্পেকটিভ কিউরেট করেছেন।  রামকিঙ্কর বাইজ (বই), বিশিষ্ট শিল্প ইতিহাসবিদ অধ্যাপক আর. শিব কুমারের বইটি রামকিঙ্কর বাইজের সবচেয়ে ব্যাপক গ্রন্থ বলে মনে করা হয়।   তথ্যসূত্র : Wikipedia, Google.  "(ছবি Google থেকে সংগৃহীত) পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। শিল্প ইতিহাসের আরও নতুন নতুন বিষয় নিয়ে আরও লেখা এই ব্লগ নিয়মিত পাবেন। তাই নিয়মিত আমাদের ব্লগ Follow করুন।

    অযোধ্যা, রাম জন্মভূমি (প্রভু শ্রীরামের জন্মস্থান), দৈব শক্তি অনুভব করার জন্য একটি দুর্দান্ত জায়গা এবং বিশ্বাস করা হয় যে এটি ঈশ্বর নিজে...

Popular Posts