Translate

Tuesday, February 14, 2023

মুক্ত আত্মার আনন্দ ও নির্দেশের দাসেরা

ক। বৈচিত্রময় এই পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষাভাষী ও‌ ধর্মের লোকেদের পাশাপাশি একসাথে বেঁচে থাকতে গেলে যেটা প্রথমেই দরকার সেটা হল সহযোগিতা এবং পরস্পরকে কিছুটা মানিয়ে নেওয়া।‌ আমরা জানি যে জঙ্গলে সিংহ, বাঘ থাকে আর হরিণ , খরগোশ তারাও থাকে। হিসেবে তারা খাদ্য-খাদক। কিন্তু তা বলে হরিণের বা খরগোশের বংশ কিন্তু নষ্ট হয়ে যায় নি। এটাই পৃথিবীর নিয়ম ।প্রকৃতির নিয়ম বা ঈশ্বরের নিয়ম। কিন্তু যদি কোন প্রজাতি মনে করে যে শুধু পৃথিবীতে আমরাই থাকবো আর বাকি সমস্ত জাতি নষ্ট হয়ে যাবে সেটা কি অসুস্থতার পরিচয় নয়? হ্যাঁ বন্ধুরা, এই প্রজাতি, যারা আজ মাথাচাড়া দিচ্ছে তারা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বিপদ। উষ্ণায়ন এর চাইতেও বড় বিপদ। বিশ্বযুদ্ধের চাইতেও বড় বিপদ। কারণ, এরা দ্বিপদ প্রাণী। যাদের মস্তিষ্ক আছে ।হাতে অস্ত্র আছে এবং আছে তাদের এক সর্বোচ্চ তথাকথিত আইন যেখানে নির্দেশাবলী আছে যে, যারা তোমার মতের সঙ্গে নয় তাদেরকে অধিকার করো, বোঝাও। না বুঝলে হাটুগেড়ে কর দেয়া করাও। (কর দেওয়া টা ১০০০ বছর ধরে হয়েছে । ) অথবা নিকেশ করে দাও । পৃথিবীতে তোমাকেই প্রতিষ্ঠা করো। এটাই তোমার সংগ্রাম। এটাই তোমার অভিযান। এটাই তোমার প্রতিজ্ঞা। এর জন্য তোমার মৃত্যুর পরে অপেক্ষা করছে শত শত যুবতীর যৌবন।সুরাপাত্র। স্বর্গের উপাদান। এই লোভের কারণে তুমি ছুটে চলো। এ জীবনে "ত্যাগের ধর্ম" করবে স্বর্গে সুখ ভোগের জন্য। লোভ। মৃত্যুর পরে আরো ভোগ করবো এর জন্য তুমি ধর্ম করো। প্রায় দেড় হাজার মাত্র বছরে যে জাতি গঠিত হয়েছে যারা নিজেদেরকে সেরা ভাবে, সারা পৃথিবী ধ্বংস করার জন্য তারা উদ্যত অথচ মুখে শান্তির কথা বলে। যারা ভাবে যে আমরাই পৃথিবীতে থাকবো তাদের যদি ইতিহাস এ কয়েক হাজার বছরের দেখি যে পৃথিবীতে তারা কি দান করেছে ? তাহলে দেখব , হি়ংসা, ক্রোধ,ধংস, সমাজ বিরোধী কাজ এবং ভোগবিলাস। আর যাদের প্রতি ঘৃণা পোষণ করে তারা দান করেছে বিজ্ঞান। সেই বিজ্ঞানকে এরা যখন গ্রহণ করে তখন ওদের লজ্জা করে না। এখন কথা হচ্ছে এই হ-য-ব-র-ল মার্কা মানুষের চরিত্র, তার জীবনযাত্রা‌ ও আচার অনুষ্ঠান,এর ভেতরেই প্রাচীনতম কতগুলি মানুষ আছে তারা অসংখ্য জাতিতে বিভক্ত। ভেদে বিভক্ত।খাদ্যাভাসে বিভক্ত। মানুষগুলো ঘুরে বেড়াচ্ছে অশিক্ষা,অর্থের অভাবে দরিদ্রতায়, কুসংস্কারে আচ্ছন্ন হয়ে। তবু তাদের মধ্যে একটা সহনশীলতা রয়েছে। নিজেদের মধ্যে যেমন অসংখ্য কোটি কোটি গোষ্ঠী, তেমনি যারা তাদের ঘৃণা করে পুজা নামে চিন্তাহীন উন্মাদনা র জন্য, তাদের ভাবে ওরাও এ দেশে তাদের অন্যান্য গোষ্ঠীর মতো একটি গোবেচারা শান্ত গোষ্ঠী। আজ আমি দেখাবো যে, সনাতন গোষ্ঠীর কিছু জায়গা যেখানে তাকে ধরে ওই আরেক বিরোধী গোষ্ঠী বারবার আক্রমণ চালাচ্ছে এবং নির্লজ্জ সনাতনপন্থীরা , যারা নিজেদের বই কিছুই পড়াশোনা করে না, তাদের সেই বইয়ে (যাকে বিকৃত করে বিরোধী গোষ্ঠীরা বারবার তুলে ধরবার চেষ্টা করছে), ঐ জায়গাগুলোতে আসলে কি কি বলা আছে। প্রথমেই ধরা যাক "পুরুষ সূক্ত"। এটি ঋকবেদেও আছে। এটি অথর্ববেদীয় আবার এটি যজুর্বেদীয়।এই পুরুষ সূক্তের যে অংশ থেকে সনাতনকে প্রত্যাঘাত করা হয় তা হল "স্বয়ং ঈশ্বর মস্তিষ্ক থেকে ব্রাহ্মণ এবং হস্ত থেকে ক্ষত্রিয় জংঘা থেকে বৈশ্য ও পা থেকে শুদ্র সৃষ্টি করেছেন"। অতএব সনাতনের মধ্যে জাতিভেদ তাদের ধর্মেই নিহিত আছে। বন্ধুরা এখানে এটা বলে রাখা আবশ্যক যে এখানে কিন্তু কোথাও এমন সূক্ত/মন্ত্র নেই যেখানে বলা হচ্ছে যে শুদ্ররা সবচেয়ে নিকৃষ্ট ব্রাহ্মণরা সবচেয়ে উৎকৃষ্ট ইত্যাদি।‌ একটা মানুষের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ আছে। মাথা আছে। তার পাও আছে। সে মানুষের শরীর টা চালাতে গেলে মাথা যেমন দরকার, তেমনই দরকার পা।‌ তাহলে একটা শরীরের কল্পনাতে মাথা থাকলে তার পা আসবেই।‌ মাথাকে তো মাথা-ই বলতে হবে পাকে তো পা-ই বলতে হবে। মাথার কাজটা মাথাই করবে। পায়ের কাজটা তো পা ই করবে। এখানে যদি তুলনা করা হয় পা উৎকৃষ্ট না মাথা উৎকৃষ্ট? তার তো উত্তর দেওয়া কঠিন। সবটা নিয়ে একটা সংস্থা। কত বিভেদকামী মানসিকতা হলে এভাবে আলাদা আলাদা করে দেখা হয় । আমরা যারা সামাজিকভাবে একত্রিত হয়ে আছি, যারা রাষ্ট্রের বিভিন্ন কাজগুলো করছি, যদি আলাদা ভাবে দেখি, তাহলে বলতে হবে, যে রিক্সাওয়ালা, ঠেলাওয়ালা সে নিকৃষ্ট আর ডাক্তার,ইঞ্জিনিয়ার, টিচার, ইত্যাদি গণ উৎকৃষ্ট। তাহলে আমাদের চিন্তা ভাবনার মধ্যে ভুল রয়ে গেল। কারণ সমাজে কিন্তু সব জাতিকেই চাই। নিকৃষ্ট বলছি যাদের ওরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। ওদেরই কাজে সমাজ চলছে।‌ মস্তিষ্কের কাজ চিন্তা,সূক্ষ্মতা । তেমনি শারীরিক বল ও চাই। অর্থ ও চাই। এগুলো না হলেও সমাজে কিছুই হবে না। সুতরাং কখনোই এরকম খন্ড দৃষ্টিতে সমাজ কে বিচার করা , রাষ্ট্রকে বিচার করা এবং জাতিকে বিচার করা চলবে না। চলেনা। চলার কোন অর্থ হয় না। আধুনিক যে সনাতন ধর্ম সেখানে ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণদেব থেকে শুরু করে স্বামী বিবেকানন্দ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, আরো পিছিয়ে যান চৈতন্য মহাপ্রভু, এমনকি শঙ্করাচার্যের সময় পর্যন্ত আপনি তাকিয়ে দেখুন, এইভাবে আমাদের দেশকে বা মানুষকে ঐ মহামানবরা চিন্তা করেননি।‌ এই সমস্ত কথাগুলো শুধু আমাদের মধ্যে বিভেদ করবার জন্যই বিরোধীরা বলে বলে বেড়াচ্ছে এবং সনাতনী ছেলে মেয়েদের বোঝা দরকার আপনারা বেদপাঠ করুন। দেখুন সেখানে কি লেখা আছে।অর্থগুলো কি লেখা আছে। এটাকে খণ্ড খণ্ড ভাবে ব্যবহার করে বিকৃত করবেন না। এই মুহূর্তে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয় ইত্যাদি যে কথাগুলো বলছি তার তো অন্য ব্যাখ্যাই হয়ে গেছে। যে মস্তিষ্কের কাজ করছে সেই ব্রাহ্মণ।(হলায়ুধ প্রনীত "ব্রাহ্মণসর্বস্বম্" পড়ুন। দেখুন সেখানেও ব্রাহ্মণের কাজ অনুযায়ী ভাগ আছে। মগজ যদি সাধনা‌ ও আধ্যাত্মিকতা তে লাগে তাকে বলা হয় "ব্রাহ্মণ শ্রেষ্ঠ"‌।এই দৃষ্টিভঙ্গিতে যিনি সনাতনী নন এরকম অন্য ধর্মের মানুষ আছেন যারা কেবলমাত্র আধ্যাত্মিকতাতে মগ্ন, হিংসা-বিদ্বেষ তাদের মধ্যে নেই,প্রেম-ভালোবাসা এবং অসহিষ্ণুতা তাদের মধ্যেও আছে তারা কিন্তু ব্রাহ্মণ। যেমন শ্রীরামকৃষ্ণ, স্বামী বিবেকানন্দ, বুদ্ধদেব , আব্দুল গফুর। তেমনি যিনি ব্রাহ্মণ হয়েও ব্রাহ্মণের কিছুই পালন করেন না; অকাজ,কুকাজ করেন নির্বিচারে আহার করে তাকে বলা হয় "চন্ডাল ব্রাহ্মণ" বা "শূদ্র ব্রাহ্মণ"। ধর্ম ও জীবনযাত্রার পরিবর্তন করলেই তাকে পরিবর্তন করা যায়। দস্যু রত্নাকর বাল্মিকী হয়েছিলেন। ) এইভাবে সব মানুষেরই কাজ অনুযায়ী তার শ্রেণী তৈরী হয়ে গেছে। সুতরাং জাত কারুর পৈত্রিক সম্পত্তি নয় এবং জন্মগতভাবে ও তা হয় না। যে ব্রাহ্মণ মগজকে অর্থ উপার্জনের কাজে লাগায় তারা অবশ্যই "বৈশ্যব্রাহ্মণ" হবেন। ব্রাহ্মণ তার মস্তিষ্কের বুদ্ধিকে দেশ সংরক্ষণ, দেশ গঠন ইত্যাদিতে কাজে লাগান তিনি "ক্ষত্রিয় ব্রাহ্মণ" হবেন যেমন ছিলেন চাণক্য‌‌।‌) আধুনিক যুগে‌ যারা সমাজের ও দেশের পরিচালক ও রক্ষণাবেক্ষণ করে যেমন পুলিশ, প্রশাসন, মিলিটারিরা "ক্ষত্রিয়"। কর্ম অনুযায়ী এভাবে জাতি বিন্যাসকে বেরিয়ে আপনি যাবেন কেমন করে? তাই "পুরুষ সূক্তাম্" আজও সঠিকভাবে বিচার করে সবার জন্যই প্রযোজ্য। ।খ। আরেকটি সূক্ত নিয়ে আলোচনা করা হয় সেখানে বলা আছে "ন অস্য প্রতিমা অস্তি" । তাকে ব্যাখ্যা করা হয় যে বেদে না কি বলা আছে যে ঈশ্বরের কোন প্রতিমা নেই। কিন্তু এটি একটি খণ্ড উদ্ধৃতি ।যদিও অদ্বৈতবাদের কথা বেদ বলে কিন্তু বেদের মধ্যেই আমরা রুদ্র , ইন্দ্র, বরুণ, অগ্নি , গণেশ, শিব ইত্যাদি দেবতা, সরস্বতী, লক্ষ্মী, দুর্গা ইত্যাদি দেবী দেরও আলোচনা আছে । এমন কি মা মনসার উদ্ধৃতি আছে। সুতরাং সনাতনী বাঙ্গালীদের কাছে এটাই আমার অনুরোধ ভালো করে বাংলায় লেখা বেদ পড়ুন।‌ না হলে প্রতিপক্ষ এর সামনে দাঁড়াবেন কি করে? খড়কুটোর মতো উড়ে যাবেন । থিম পুজো ছাড়া আপনাদের আর কিছু সম্বল থাকবে না। নিজের ধর্মের উপর শ্রদ্ধা থাকবেনা। ধান্দা হবে কর্পোরেট ব্যবসা। তারা আমাদেরকে আঘাত করে এই বলে যে, আমাদের বইয়ে নাকি বহু দেবতার পূজা করা হয় এবং অংশবাদ এর পুজো করা হয়।‌ আমরা কি কেউ লক্ষ্য করিনি যে যখনি যা৺র পুজো করা হয় সেখানে তাকে পূর্ণ দেবতা হিসেবে দেখানো হয়, অংশ হিসেবে নয়। তাকে আমরাই মহা সমারোহে পুজো করে তাকেই আবার বিসর্জন দিয়ে দিই। ‌যদি আমরা মূর্তি পূজা চরম মানতাম, তাহলে কি আমরা বিসর্জন দিতাম ? প্রতিমা সনাতনীদের কাছে ঠিক বিজ্ঞানীদের এক গবেষণাগারের মত। তার মধ্যে ঈশ্বরের "এক একটি ক্রিয়া" বা "গুণের" বা "ভাবের" চিন্তাকেই আমরা এক এক সময়ে একেক রকম রূপে সামনে তুলে আনি আমাদের নিজস্ব ভাবনায়। আমরা এটা কি কেউ অস্বীকার করতে পারব যে আমাদের নিজেদের মধ্যেই প্রতিমুহূর্তে ভাবের বদল হয় এবং একটি মানুষের ভাব,চিন্তাধারা ,ভালোলাগা আলাদা। আমাদের উদারতা এইযে, আপনার ভাবনা, আপনার ভালো লাগাতে আমি শাসন বসাবো না। আপনি আপনার উদারতায় আপনার মত করে সেই পরমেশ্বরের পথে এগিয়ে যান আপনার ভাবে। আর যে ধর্ম শুধু একমাত্র "এক দেবতার" কথাই চাপিয়ে দেয়, যাকে আপনি চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছেন না, ভাবতেও পারছেন না। যিনি চাপাচ্ছেন তিনিও দেখেননি। সেই ধর্মটা কি সুরহীন, রসহীন, বৈচিত্র্যহীন একঘেয়ে ভয়ের আর লোভের শাসন দিয়ে তৈরি নয়? শেখানো হয়েছে তুমি শুধু এই এই কাজগুলি এইভাবে করো যাতে পরজন্মে গিয়ে স্বর্গে ভোগবিলাস করতে পারো। পাশাপাশি মিলিয়ে দেখুন একটা হল "নিজের পথে নিজেকে খুঁজে বার করে নিজের বৃহৎকে জানা" এবং "আত্মার অনুসন্ধান করা"। আরেকটা হল "চাপিয়ে দেওয়া নির্দেশ"। ।গ। পরিশেষে বলব এই সনাতন জাতিকে সমর্থ হতে হলে এই জাতিভেদ প্রথা ভুলে নিজেদের বেদ উপনিষদ ইত্যাদি গ্রন্থ গুলি ঠিক করে পাঠ করতে হবে। বুঝতে হবে। বিজ্ঞানসম্মত ভাবে তাকে প্রয়োগ করতে হবে। যদি কিছু প্রাচীন মনে হয়, যদি কিছু সংস্কার করার মনে হয় তাকে বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে সংস্কৃত করে আধুনিক হয়ে উঠতে হবে। এবং সে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার নামই জীবন। সবচেয়ে বড় কথা হল যে সবাইকে নিয়ে চলতে গেলে, শান্তিতে থাকতে গেলে যদি সনাতনীদের মধ্যেও কোন উগ্রপন্থী সৃষ্টি হয় তাদেরকে দাবিয়ে রাখতে হবে। পরস্পরকে এই সম্মান জানানোর মধ্যেই পৃথিবীর শান্তি। আপন আপন পদ্ধতি পালন করা, বিজ্ঞানভিত্তিক ভাবে সমাজকে উন্নততর করে তোলার নামই হলো সত্যি কারের মানবতা। আসুন এই দুর্দিনে আমরা এই পথেই এগিয়ে চলি। মানুষকে এই কথাগুলো শেখাই। অন্বেষণ করে দেখুন এই লেখাটির মধ্যে কোন ত্রুটি আছে কিনা এবং আমাদের সংশোধন করুন। ।

No comments:

Featured Posts

রামকিঙ্কর বেইজ - আধুনিক ভাস্কর্যের পথপ্রদর্শক  রামকিঙ্কর বেইজ ছিলেন একজন ভারতীয় ভাস্কর এবং চিত্রশিল্পী, আধুনিক ভারতীয় ভাস্কর্যের পথপ্রদর্শকদের একজন এবং প্রাসঙ্গিক আধুনিকতাবাদের একজন প্রধান ব্যক্তিত্ব।  বেইজ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলায় অর্থনৈতিকভাবে বিনয়ী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।  কিশোর বয়সে রামকিঙ্কর ভারতের ব্রিটিশ শাসকদের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনে জড়িত ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামীদের প্রতিকৃতি আঁকতেন।  16 বছর বয়সে তিনি প্রখ্যাত সাংবাদিক রামানন্দ চ্যাটার্জির নজরে পড়েন। চার বছর পর রামকিঙ্কর শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলার ছাত্র হিসেবে যোগ দেন।  বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিপ্লোমা অর্জনের পর তিনি ভাস্কর্য বিভাগের প্রধান হন।  রামকিঙ্করের বিখ্যাত ভাস্কর্য শিষ্যদের মধ্যে রয়েছে প্রভাস সেন, শঙ্খো চৌধুরী, অবতার সিং পানওয়ার, মদন ভাটনগর, ধর্মানি, বলবীর সিং কাট্ট, রাজুল ধারিয়াল এবং সুসান ঘোস একটি ছোট ছেলে হিসাবে, তিনি স্থানীয় কারিগর এবং চিত্র-নির্মাতাদের কাজের সময় দেখে বড় হয়েছিলেন;  এবং তার পথে যা আসে তা দিয়ে ছোট মাটির চিত্র এবং পেইন্টিং তৈরি করে। 1938 সালে শান্তিনিকেতনে তৈরি "সাঁওতাল পরিবার"  এটি তাকে 1925 সালে, জাতীয়তাবাদী প্রকাশক এবং নতুন ভারতীয় শিল্প আন্দোলনের জন্য রামানন্দ চ্যাটার্জির পরামর্শে শান্তিনিকেতনের আর্ট স্কুল কলা ভাবনায় তার পথ চিহ্নিত করতে পরিচালিত করেছিল।  শান্তিনিকেতনে, নন্দলাল বোসের নির্দেশনায় এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দ্বারা আকৃতির মুক্ত বৌদ্ধিক পরিবেশের দ্বারা উৎসাহিত হয়ে, তাঁর শৈল্পিক দক্ষতা এবং বুদ্ধিবৃত্তিক দিগন্ত নতুন গভীরতা এবং জটিলতা অর্জন করে।  কলা ভবনে পড়াশোনা শেষ করার পর শীঘ্রই তিনি এর অনুষদের সদস্য হন এবং নন্দলাল এবং বিনোদ বিহারী মুখার্জির সাথে শান্তিনিকেতনকে স্বাধীনতা-পূর্ব ভারতে আধুনিক শিল্পের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে পরিণত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।  তিরিশের দশকের গোড়ার দিকে তিনি ক্যাম্পাসকে একের পর এক ভাস্কর্যে ভরিয়ে দিতে শুরু করেন, যা বিষয়বস্তুতে উদ্ভাবনী এবং ব্যক্তিগত শৈলীতেও ছিল। এই ধারায় তাঁর প্রথম শ্রেষ্ঠ রচনা ছিল 1938 সালে করা সাঁওতাল পরিবার। এই বৃহত্তর জীবন ভাস্কর্যে তিনি এই অঞ্চলের উপজাতীয় কৃষকদের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন, চিত্রগুলিকে আইকনিক উপস্থিতি এবং মর্যাদাপূর্ণ অনুগ্রহ প্রদান করেছিলেন যা এখনও পর্যন্ত ঈশ্বর এবং শাসকদের চিত্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। সিমেন্ট এবং ল্যাটারাইট মর্টার ব্যবহার করে চিত্রগুলিকে মডেল করা, এবং একটি ব্যক্তিগত শৈলীর ব্যবহার যাতে আধুনিক পশ্চিমা এবং ভারতীয় প্রাক-শাস্ত্রীয় ভাস্কর্যের মূল্যবোধগুলিকে একত্রিত করা হয়েছিল।  এই মৌলিক কাজের মাধ্যমে রামকিঙ্কর নিজেকে নিঃসন্দেহে আধুনিক ভারতীয় ভাস্কর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন।  ঋত্বিক ঘটক বিচক্ষণতার সাথে বেইজের উপর 'রামকিঙ্কর' (1975) নামে একটি তথ্যচিত্র তৈরি করেছিলেন যেখানে তিনি তাকে একজন রাজনৈতিক আইকন হিসেবে তুলে ধরেন।  2012 সালে ভাস্কর কে.এস.  রাধাকৃষ্ণান দিল্লির ন্যাশনাল গ্যালারি অফ মডার্ন আর্ট-এ রামকিঙ্করের একটি গ্র্যান্ড রেট্রোস্পেকটিভ কিউরেট করেছেন।  রামকিঙ্কর বাইজ (বই), বিশিষ্ট শিল্প ইতিহাসবিদ অধ্যাপক আর. শিব কুমারের বইটি রামকিঙ্কর বাইজের সবচেয়ে ব্যাপক গ্রন্থ বলে মনে করা হয়।   তথ্যসূত্র : Wikipedia, Google.  "(ছবি Google থেকে সংগৃহীত) পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। শিল্প ইতিহাসের আরও নতুন নতুন বিষয় নিয়ে আরও লেখা এই ব্লগ নিয়মিত পাবেন। তাই নিয়মিত আমাদের ব্লগ Follow করুন।

    অযোধ্যা, রাম জন্মভূমি (প্রভু শ্রীরামের জন্মস্থান), দৈব শক্তি অনুভব করার জন্য একটি দুর্দান্ত জায়গা এবং বিশ্বাস করা হয় যে এটি ঈশ্বর নিজে...

Popular Posts