Translate

Wednesday, March 22, 2023

অমৃতকথা | বীরেশ্বরানন্দ | দশম সংঘাধ্যক্ষ রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন


এই অমূল্য উপদেশগুলি  পরমপূজ্যপাদ দশম সঙ্ঘগুরু স্বামী বীরেশ্বরানন্দজীর শ্রীমুখ নিঃসৃত:-

¤ জপ    মানে   কি ?  
ঈশ্বরের  কোন বিশেষ   মূর্তি   যিনি   আমার   ইষ্ট  দেবতা  তাঁর   নাম  বা  মন্ত্র   পুনঃ  পুনঃ   আবৃত্তি   করার   নাম  জপ ।   

¤  মন্ত্র   মানে  কি ?   
যা  আমাদের   মনকে  বাইরের   জগৎ থেকে   টেনে   এনে  ভগবৎ  পাদপদ্মে   ধরে  রাখে।  আর   বীজ  মন্ত্র   হচ্ছে   ---  যে - মন্ত্র জপের   দ্বারা   অন্তরের  আধ্যাত্মিক শক্তির  স্ফূরণ  হবে , যে  শক্তির  জোরে  মানুষকে  আস্তে   আস্তে  ভগবদ্দর্শনের  দিকে  নিয়ে যাবে।

¤ সেইজন্যই   জপ  করাটাই    হচ্ছে   মুখ্য   জিনিস ।  জপের    ভিতর  যে  বীজমন্ত্র  তার  মধ্যে  তোমার    সমস্ত  আধ্যাত্মিক  শক্তি   আছে।  জপ   না  করলে   সেই  শক্তির   স্ফূরণ   হবে  না। সেইজন্য   শুধু  ১০৮ -  বার   জপ   করলে   কি করে  এগুনো   যাবে ?   বেশি   জপ   করতে   হবে।   কিন্তু   অনেকেরই   হয়তো   সংসারের   নানা  কাজের    জন্য   বেশি   সময়  থাকে   না ।

¤ তাদের  জন্য  বলা  হয়েছে,  সবসময়  তোমরা  মনে  মনে  জপ   কর।  তোমাদের  কাজকর্মের  ভিতরে  মনে   মনে   জপ   কর। আমাদের   সংসারের   কাজকর্মের   সঙ্গে  সঙ্গে  ভগবানের  নাম  নিতে  হবে। মনে  মনে  স্মরণ করতে  হবে ।  এটা  যদি করতে   পার,  তবে  কম  সময়ের   জন্য   জপ  করলেও   পূরণ   হয়ে  যাবে।  দীক্ষা   নিয়ে   ১০৮  বার   জপ  করব,  তার   জন্য   দীক্ষা   নয়।  তোমাদের   জপ  করতে  হবে   সবসময় ।  

¤ এছাড়া  আর  একটা  জিনিস  হচ্ছে  আমরা  যতই   ধর্মজীবন  যাপন   করি ,  আমাদের   সংসারের   প্রতি  টান   থাকে।  তাহলে   বেশি   এগুনো   যাবে   না।  আমাদের    বৈরাগ্য   অবলম্বন   করতে   হবে।  বৈরাগ্য    অবলম্বন   করতে   গেলেই   প্রথমে    বিচার   করতে   হবে। বিচার   করে  আমরা    দেখব  সংসারের   কোন   কিছুই   স্থায়ী   নয়,  সবই  নশ্বর ।  অতএব  যিনি    সর্বদা   আছেন   সেই  ভগবানকে   আমাদের   পেতে   হবে।  যখন  মনে  এই ভাবটি  ওঠে , তখনই   আমাদের   ধর্ম জীবনের   পক্ষে   সুবিধা ।

¤ সংসারে  তিনটি   জিনিস   দুর্লভ  সেই  তিনটি   জিনিস   হচ্ছে  -------   মনুষ্যজন্ম , ভগবান  লাভ করার  ইচ্ছা,  আর  মহাপুরুষের সঙ্গ।  আমাদের  সকলের   মনুষ্যজন্ম   তো   হয়েছেই , আশা   করি,  আমাদের   সকলেরই   ভগবান    লাভ   করার   ইচ্ছাও  আছে।

¤  যাঁরা  মহাপুরুষের  সংস্পর্শে  আসতে  পারেননি,    তাঁরা  কথামৃত  পড়লে  ঠিক  সেই   মহাপুরুষসঙ্গ , সাধুসঙ্গ    পাবেন  ।   যদি    ধীর   ভাবে   কেউ   কথামৃত  পড়ে  কোন   একটা  দিনের   ঘটনাকে  ধ্যান   করে ,  তবে   সে   ঠিক  দক্ষিণেশ্বরে   চলে    যাবে   ঠাকুরের  ঘরে  ,   আর ধ্যানে   বসে  সে   ঠাকুরের  কথাই   শুনবে। ঠিক  এইভাবে   চিন্তা   করতে  হবে। এই  ভাবে  যদি  হয় তবেই       সাধুসঙ্গ  হয়ে   গেল।

¤  রাজা   মহারাজ   বলতেন  "তোমাদের  এক   কথায়   ব্রহ্মজ্ঞান   দিচ্ছি   আমি।   রোজ  কথামৃত    পড়লে   সংসারের   যা   ঝামেলা,  সংসারের    দিকে    আসক্তি,  এসব   আস্তে  আস্তে   কমে   যাবে।  আর  ভগবানলাভের   জন্য   মনে   খুব    তীব্র   ইচ্ছা   হবে ।"

. সংগৃহীত

No comments:

Featured Posts

রামকিঙ্কর বেইজ - আধুনিক ভাস্কর্যের পথপ্রদর্শক  রামকিঙ্কর বেইজ ছিলেন একজন ভারতীয় ভাস্কর এবং চিত্রশিল্পী, আধুনিক ভারতীয় ভাস্কর্যের পথপ্রদর্শকদের একজন এবং প্রাসঙ্গিক আধুনিকতাবাদের একজন প্রধান ব্যক্তিত্ব।  বেইজ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলায় অর্থনৈতিকভাবে বিনয়ী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।  কিশোর বয়সে রামকিঙ্কর ভারতের ব্রিটিশ শাসকদের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনে জড়িত ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামীদের প্রতিকৃতি আঁকতেন।  16 বছর বয়সে তিনি প্রখ্যাত সাংবাদিক রামানন্দ চ্যাটার্জির নজরে পড়েন। চার বছর পর রামকিঙ্কর শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলার ছাত্র হিসেবে যোগ দেন।  বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিপ্লোমা অর্জনের পর তিনি ভাস্কর্য বিভাগের প্রধান হন।  রামকিঙ্করের বিখ্যাত ভাস্কর্য শিষ্যদের মধ্যে রয়েছে প্রভাস সেন, শঙ্খো চৌধুরী, অবতার সিং পানওয়ার, মদন ভাটনগর, ধর্মানি, বলবীর সিং কাট্ট, রাজুল ধারিয়াল এবং সুসান ঘোস একটি ছোট ছেলে হিসাবে, তিনি স্থানীয় কারিগর এবং চিত্র-নির্মাতাদের কাজের সময় দেখে বড় হয়েছিলেন;  এবং তার পথে যা আসে তা দিয়ে ছোট মাটির চিত্র এবং পেইন্টিং তৈরি করে। 1938 সালে শান্তিনিকেতনে তৈরি "সাঁওতাল পরিবার"  এটি তাকে 1925 সালে, জাতীয়তাবাদী প্রকাশক এবং নতুন ভারতীয় শিল্প আন্দোলনের জন্য রামানন্দ চ্যাটার্জির পরামর্শে শান্তিনিকেতনের আর্ট স্কুল কলা ভাবনায় তার পথ চিহ্নিত করতে পরিচালিত করেছিল।  শান্তিনিকেতনে, নন্দলাল বোসের নির্দেশনায় এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দ্বারা আকৃতির মুক্ত বৌদ্ধিক পরিবেশের দ্বারা উৎসাহিত হয়ে, তাঁর শৈল্পিক দক্ষতা এবং বুদ্ধিবৃত্তিক দিগন্ত নতুন গভীরতা এবং জটিলতা অর্জন করে।  কলা ভবনে পড়াশোনা শেষ করার পর শীঘ্রই তিনি এর অনুষদের সদস্য হন এবং নন্দলাল এবং বিনোদ বিহারী মুখার্জির সাথে শান্তিনিকেতনকে স্বাধীনতা-পূর্ব ভারতে আধুনিক শিল্পের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে পরিণত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।  তিরিশের দশকের গোড়ার দিকে তিনি ক্যাম্পাসকে একের পর এক ভাস্কর্যে ভরিয়ে দিতে শুরু করেন, যা বিষয়বস্তুতে উদ্ভাবনী এবং ব্যক্তিগত শৈলীতেও ছিল। এই ধারায় তাঁর প্রথম শ্রেষ্ঠ রচনা ছিল 1938 সালে করা সাঁওতাল পরিবার। এই বৃহত্তর জীবন ভাস্কর্যে তিনি এই অঞ্চলের উপজাতীয় কৃষকদের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন, চিত্রগুলিকে আইকনিক উপস্থিতি এবং মর্যাদাপূর্ণ অনুগ্রহ প্রদান করেছিলেন যা এখনও পর্যন্ত ঈশ্বর এবং শাসকদের চিত্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। সিমেন্ট এবং ল্যাটারাইট মর্টার ব্যবহার করে চিত্রগুলিকে মডেল করা, এবং একটি ব্যক্তিগত শৈলীর ব্যবহার যাতে আধুনিক পশ্চিমা এবং ভারতীয় প্রাক-শাস্ত্রীয় ভাস্কর্যের মূল্যবোধগুলিকে একত্রিত করা হয়েছিল।  এই মৌলিক কাজের মাধ্যমে রামকিঙ্কর নিজেকে নিঃসন্দেহে আধুনিক ভারতীয় ভাস্কর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন।  ঋত্বিক ঘটক বিচক্ষণতার সাথে বেইজের উপর 'রামকিঙ্কর' (1975) নামে একটি তথ্যচিত্র তৈরি করেছিলেন যেখানে তিনি তাকে একজন রাজনৈতিক আইকন হিসেবে তুলে ধরেন।  2012 সালে ভাস্কর কে.এস.  রাধাকৃষ্ণান দিল্লির ন্যাশনাল গ্যালারি অফ মডার্ন আর্ট-এ রামকিঙ্করের একটি গ্র্যান্ড রেট্রোস্পেকটিভ কিউরেট করেছেন।  রামকিঙ্কর বাইজ (বই), বিশিষ্ট শিল্প ইতিহাসবিদ অধ্যাপক আর. শিব কুমারের বইটি রামকিঙ্কর বাইজের সবচেয়ে ব্যাপক গ্রন্থ বলে মনে করা হয়।   তথ্যসূত্র : Wikipedia, Google.  "(ছবি Google থেকে সংগৃহীত) পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। শিল্প ইতিহাসের আরও নতুন নতুন বিষয় নিয়ে আরও লেখা এই ব্লগ নিয়মিত পাবেন। তাই নিয়মিত আমাদের ব্লগ Follow করুন।

    অযোধ্যা, রাম জন্মভূমি (প্রভু শ্রীরামের জন্মস্থান), দৈব শক্তি অনুভব করার জন্য একটি দুর্দান্ত জায়গা এবং বিশ্বাস করা হয় যে এটি ঈশ্বর নিজে...

Popular Posts