Translate

Wednesday, January 27, 2021

ভারত ভ্রমনের পর স্বামী বিবেকানন্দের রামকৃষ্ণ দেবের সঙ্গে সাক্ষাৎ

 নরেন্দ্রনাথকে দেখে ঠাকুরের খুশী ধরে না। এদিনও ঠাকুর তাঁকে গান শোনাতে বললেন।

নরেন্দ্রনাথ এদিন ঠাকুরকে দুটি গান শুনিয়েছিলেন। 

প্রথম গানটি নরেন্দ্রনাথ গাইলেন ---

"মন চল নিজ নিকেতনে।

সংসার বিদেশে, বিদেশীর বেশে, ভ্রম কেন অকারণে॥

..... মন চলো নিজ নিকেতনে।"

'কই, আর একখানা গা' --- বললেন ঠাকুর।

নরেন্দ্রনাথ আবার গান ধরলো, গানটি বেচারাম চট্টোপাধ্যায় রচিত ---

"যাবে কি হে দিন আমার বিফলে চলিয়ে।

আছি নাথ দিবানিশি আশাপথ নিরখিয়ে॥

তুমি ত্রিভুবন নাথ, আমি ভিখারি অনাথ।

কেমনে বলিব তোমায় এস হে মম হৃদয়ে॥

হৃদয়-কুটীর-দ্বার, খুলে রাখি আনিবার।

কৃপা করি একবার এসে কি জুড়াবে হিয়ে॥"

গান শুনে ভাবে বিভোর ঠাকুর, হঠাৎ চমকিয়ে উঠে নরেন্দ্রনাথের হাত ধরে টেনে নিয়ে গেলেন উত্তরের বারান্দার ঘরে। বন্ধ হলো বাইরের দরজা। মুখোমুখি বসলেন দুজনে।

ঠাকুরের চোখ জলে ভেসে যাচ্ছে, কেঁদে কেঁদে বলছেন, "তোর কি মায়া দয়া নেই ? কোথায় ছিলি এতদিন ? দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, বছরের পর বছর চেয়ে আছি তোর পথ পানে। কি করে আমায় ভুলে ছিলি ?"

"সেদিন মাঝরাতে তুই এলি আমার ঘরে, আমায় ঘুম থেকে টেনে তুললি। বললি, আমি এলাম...."

ঠাকুরের কথা শুনে চমকে উঠলো নরেন্দ্রনাথ।

এই সাক্ষাত নরেন্দ্রনাথের জীবনে একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। সাক্ষাৎকারের প্রসঙ্গে নরেন্দ্রনাথ বলেছিলেন, "তাহাকে [রামকৃষ্ণ] একজন সাধারণ লোকের মতো বোধ হইল, কিছু অসাধারণত্ব দেখিলাম না। অতি সরল ভাষায় তিনি কথা কহিতেছিলেন, আমি ভাবিলাম, এ ব্যক্তি কি একজন বড় ধর্মাচার্য হইতে পারেন ? আমি সারা জীবন অপরকে যাহা জিজ্ঞাসা করিয়াছি, তাহার নিকটে গিয়া তাহাকেও সেই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করিলাম,

'মহাশয়, আপনি কি ঈশ্বর বিশ্বাস করেন ?'

তিনি উত্তর দিলেন --- 'হাঁ।'

'মহাশয়, আপনি কি তাহার অস্তিত্বের প্রমাণ দিতে পারেন ?'

'হাঁ'। 

'কি প্রমাণ ?' 

'আমি তোমাকে যেমন আমার সম্মুখে দেখিতেছি, তাহাকেও ঠিক সেইরূপ দেখি, বরং আরও স্পষ্টতর, আরও উজ্জ্বলতররূপে দেখি।'

আমি একেবারে মুগ্ধ হইলাম।"

.

জয় ঠাকুর

 .

(সংগৃহীত)

Friday, January 22, 2021

জগন্নাথ দেব

 কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের পর অনেকদিন কেটে গেছে। শ্রীকৃষ্ণ তখন দ্বারকায়। একদিন তিনি গাছের উপর পা ঝুলিয়ে বসে ছিলেন। তাঁর রাঙা চরণকে টিয়া পাখি ভেবে ভুল করে বাণ মেরে বসল এক শবর। নাম তার জরা। বাণের আঘাতেই অবশেষে প্রাণ হারালেন কৃষ্ণ। অপঘাতে শ্রীকৃষ্ণের মৃত্যুর খবরপেয়ে অর্জুন ছুটে এলেন দ্বারকায়। দেহ সৎকারের সময় অর্জুন দেখলেন, গোটা দেহটা পুড়লেও সখার নাভিদেশ তো পুড়ছে না ! 

তখনই হল দৈববাণী, ‘ইনিই সেই পরমব্রহ্ম। অর্জুন, এঁকে সমুদ্রে নিক্ষেপ করো। সমুদ্রেই ওঁর অনন্তশয়ন।’ অর্জুন তাই করলেন। ঢেউয়ের মাথায় ভাসতে ভাসতে এগিয়ে চলল পরমব্রহ্ম সেই নাভি। আর তাকে লক্ষ করে সমুদ্রের তীর ধরে ছুটে চলল অনার্য সেই শবর – জরা। শেষ অবধি তার বাণেই মৃত্যু হল ভগবানের !

দ্বারকা থেকে পুরী পর্যন্ত ছুটে চলা। অবশেষে এখানেই ঠাকুরকে স্বপ্ন দেখল সে, ‘কাল ভোরে আমাকে তুলে নে এখন থেকে তোর বংশধর, শবরদের হাতেই পুজো নেব আমি’। তখন থেকে নীলমাধবরূপে তিনি পূজিত হতে থাকলেন শবরদের কাছে। সময়টা দ্বাপর যুগ। 

এরপর এলো কলি যুগ। কলিঙ্গের রাজা তখন ইন্দ্রদ্যুম্ন দেব। তিনি ছিলেন বিষ্ণুর ভক্ত। সেই উদ্দেশ্যে তিনি গড়ে তুললেন একটি মন্দির, শ্রীক্ষেত্রে। এখন আমরা তাকে চিনি জগন্নাথধাম রূপে। কিন্তু মন্দিরে বিগ্রহ নেই। 

রাজসভায় একদিন কথা প্রসঙ্গে তিনি জানতে পারলেন নীলমাধবের কথা। ইনি নাকি বিষ্ণুরই এক রূপ। অমনি চারদিকে লোক পাঠালেন রাজা। এঁদের প্রত্যেকেই ধার্মিক ব্রাহ্মণতনয়। বাকিরা খালি হাতে ফিরে এলেও, ফিরলেন না একজন – বিদ্যাপতি। তিনি জঙ্গলের মধ্যে পথ হারালে তাঁকে উদ্ধার করলেন সুন্দরী শবর কন্যা ললিতা। নিয়ে এলেন তাদের বাড়ি। 

ললিতা শবররাজ বিশ্ববসুর কন্যা। ললিতার প্রেমে পড়লেন বিদ্যাপতি। বিয়ে হল দুজনের। বিয়ের পর বিদ্যাপতি আবিষ্কার করলেন রোজ সকালেই শবররাজ কয়েক ঘণ্টার জন্য কোথাও উধাও হয়ে যান, আবার ফিরে আসেন। কোথায় যান বিশ্ববসু ! স্ত্রীকে প্রশ্ন করতে বিদ্যাপতি জানতে পারলেন জঙ্গলের মধ্যে একটি গোপন জায়গায় নীলমাধবের পূজো করতে যান শবররাজ বিশ্ববসু।

নীলমাধবের সন্ধান যখন পাওয়া গেছে, তখন আর ছাড়ার নয়। অমনি বিদ্যাপতি বায়না ধরলেন, তিনিও দর্শন করবেন নীলমাধবকে। বিশ্ববসু প্রথমে রাজি না হলেও, অবশেষে মত।দিলেন। তবে শর্তসাপেক্ষে। বিগ্রহ পর্যন্ত চোখ বেঁধে যেতে হবে বিদ্যাপতিকে। জামাতা হলেও বিদ্যাপতিকে কোন ভাবে নীলমাধবের সন্ধান দিতে রাজি ছিলেন না বিশ্ববসু।

বিদ্যাপতিও ছাড়ার পাত্র নন। চোখ বাঁধা অবস্থায় যাওয়ার সময় তিনি গোটা পথটায় সরষের দানা ছড়াতে ছড়াতে গেলেন। যথাস্থানে পৌঁছে যখন তিনি দর্শন পেলেন নীলমাধবের, তখন তাঁর প্রাণ আনন্দে ভরে উঠল।

বনের মধ্যে পূজোর ফুল কুড়িয়ে এনে বিশ্ববসু যখন পূজোয় বসলেন, অমনি দৈববাণী হল, ‘এতদিন আমি দীন-দুঃখীর পূজো নিয়েছি, এবার আমি মহাউপাচারে রাজা ইন্দ্রদ্যুম্নের পূজো নিতে চাই।’

ভীষণ রেগে গেলেন শবররাজ। ইষ্টদেবতাকে হারাবার দুঃখে বন্দী করলেন বিদ্যাপতিকে। কিন্তু কন্যা ললিতার বারবার কাকুতি মিনতিতে বাধ্য হলেন জামাতাকে মুক্ত করতে। বিদ্যাপতিও সঙ্গে সঙ্গে এই খবর পৌঁছে দিলেন রাজার কাছে। ইন্দ্রদ্যুম্ন মহানন্দে জঙ্গলের মধ্যে সেই গুহার উদ্দেশ্যে রওনা হলেন ঠাকুরকে সাড়ম্বরে রাজপ্রাসাদে আনতে। কিন্তু একি, নীলমাধব কোথায় !

আটক হলেন শবররাজ। তখন দৈববাণী হল যে সমুদ্রের জলে ভেসে আসবে কাঠ। সেই থেকেই বানাতে হবে বিগ্রহ। হাজার। হাজার হাতি, ঘোড়া, সেপাইসাস্ত্রী, লোকলস্কর নিয়েও সমুদ্র থেকে তোলা গেল না সেই কাঠ। শেষে কাঠের একদিক ধরলেন শবররাজ আর একদিক ব্রাহ্মণপুত্র বিদ্যাপতি। জগন্নাথের কাছে ব্রাহ্মণ-শবর কোনও ভেদাভেদ নেই যে !

মহারাজ তাঁর কারিগরদের লাগালেন মূর্তি গড়তে। কিন্তু সেই কাঠ এমনই পাথরের মত শক্ত যে ছেনি, হাতুড়ি সবই যায় ভেঙে। তা হলে উপায় ! মূর্তি গড়বে কে ! মহারাজের আকুলতা দেখে বৃদ্ধের বেশে এবার হাজির হলেন স্বয়ং জগন্নাথ। তিনিই গড়বেন মূর্তি। তবে শর্ত একটাই। একুশদিন আগে তিনি নিজে দরজা না খুললে কেউ যেন তাঁর ঘরে না আসে।

শুরু হল কাজ। ইন্দ্রদ্যুম্নের রাণি গুন্ডিচা রোজই রুদ্ধ দুয়ারে কান পেতে শোনেন কাঠ কাটার ঠক্ ঠক্ শব্দ। চোদ্দদিন পর হঠাৎ রাণি দেখলেন রুদ্ধদ্বার কক্ষ নিস্তব্ধ। কী হল ! কৌতুহল চেপে রাখতে না পেরে রাণি মহারাজকে জানাতেই ইন্দ্রদ্যুম্ন খুলে ফেললেন কক্ষের দরজা। ভেতরে দেখেন বৃদ্ধ কারিগর উধাও, পড়ে আছে তিনটি অসমাপ্ত মূর্তি। তাদের হাত, পা কিছুই গড়া হয় নি। 

গর্হিত অপরাধ করে ফেলেছেন ভেবে দুঃখে ভেঙে পড়লেন রাজা। তখন তাঁকে স্বপ্ন দিয়ে জগন্নাথ বললেন যে এমনটা আগে থেকেই পুনর্নির্ধারিত ছিল। তিনি এই রূপেই পূজিত হতে চান। সেই থেকেই শ্রী জগন্নাথদেবের মূর্তি ওভাবেই পূজিত হয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে।

পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের বলভদ্রদেবের বিগ্রহ তারা যন্ত্রের উপর প্রতিষ্ঠিত, সুভদ্রা প্রতিষ্ঠিতা ভুবনেশ্বরী যন্ত্রের উপর এবং জগন্নাথদেব প্রতিষ্ঠিত দক্ষিণাকালীর যন্ত্রের উপর।

ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব বলতেন, ‘কলিতে জগন্নাথের মহাপ্রসাদ সাক্ষাৎ ব্রহ্ম'।

শ্রীশ্রী জগন্নাথ দেবের প্রণাম মন্ত্রঃ -- 

ॐ নীলাচলনিবাসায় নিত্যায় পরমাত্মনে । 

বলভদ্র সুভদ্রাভ্যাং জগন্নাথায় তে নমঃ ।। 

-- পরমাত্মা স্বরূপ যাঁরা নিত্যকাল নীলাচলে বসবাস করেন, সেই বলভদ্রদেব, সুভদ্রা ও জগন্নাথদেব কে প্রণতি নিবেদন করি। 

জয় জগন্নাথ। 

.

   (সংগৃহীত)

Monday, January 18, 2021

Swami SaradaNanda

Today is the BirthDay of SARAT MAHARAJ.

I have found some nice posts on Him. I am posting those here as my Tribute to Him for public knowledge about Him.

I pay my sincere thanks to the writers, to those who have posted these.

1.

১৮৬৫ খ্রীস্টাব্দের ২৩ ডিসেম্বর শনিবার ( ৯পৌষ,১২৭২ সাল, শুক্লা ষষ্ঠীতিথি) স্বামী সারদানন্দ জন্মগ্রহণ করেন ৷

সারদানন্দের পূর্বাশ্রমের নাম শরৎচন্দ্র চক্রবর্তী ৷

তেরো বৎসর বয়সে উপনয়নের পর তিনি  অতি আগ্রহসহকারে নিয়মিত পূজাপাঠ ও জপধ্যানে মগ্ন হলেন ৷

তিনি এসময় ব্রহ্মসমাজে যাতায়াত করতেন ৷

১৮৮২ খ্রীস্টাব্দে তিনি হেয়ার স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবার পর সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে ভর্তি হন ৷

 এই সময় তিনি শ্রীরামকৃষ্ণকে দর্শন করেন এবং প্রায় তিন বছর তাঁর সান্নিধ্য লাভ করেন ৷ ঠাকুরের দিব্যজীবনের বহু ঘটনার তিনি সাক্ষী ৷

শ্রীরামকৃষ্ণদেবের অন্তর্ধানের পর শরৎচন্দ্র বরানগর মঠে স্বাধ্যায় ও সাধনায় মগ্ন হন ৷

এই সময় সন্ন্যাস গ্রহণের পর তাঁর নাম হয় স্বামী সারদানন্দ ৷

তন্ত্রের সাধন-রহস্য জানবার জন্য তিনি পিতৃব্য ঈশ্বরচন্দ্রের কাছে ১৯০০ সালের ২৫ নভেম্বর তন্ত্রসাধনায় অভিষিক্ত হন ৷ তিনি শ্রীমা ও স্বামী ব্রহ্মানন্দের অনুমতি নেন ৷

ঠাকুর ও শ্রীমায়ের কৃপায় তিনি সাধনপথে দ্রুত অগ্রসর হন ৷ নারীমাত্রে মাতৃজ্ঞান তন্ত্রসাধনার প্রথম সোপান ৷

দেবীর প্রত্যক্ষদর্শন তার চরম সিদ্ধি ৷


১৮৯০ থেকে ১৮৯৫ সাল পর্যন্ত সারদানন্দ ভারতের বিভিন্ন তীর্থক্ষেত্রে ও হিমালয়ে তপস্যা করেন ৷

তারপর ১৮৯৬ সালে স্বামীজীর আহ্বানে তিনি পাশ্চাত্যে প্রচারের জন্য যান ৷

পাশ্চাত্যে ২বছর থেকে সারদানন্দ আবার স্বামীজীর নির্দেশে ভারতে ফিরে আসেন ৷

১৮৯৭ সালে স্বামীজী রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা করেন এবং পরে ১৯০১ সালে সারদানন্দকে সঙ্ঘের সেক্রেটারি করেন ৷

১৮৯৮ সালে স্বামীজী উদ্বোধনে পত্রিকা শুরু করেন এবং স্বামী ত্রিগুণাতীতানন্দ সম্পাদক হন ৷

১৯০২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ত্রিগুণাতীত বেদান্ত প্রচারের জন্য আমেরিকায় যান এবং সারদানন্দের ওপর পত্রিকার ভার পড়ে ৷

স্বামীজীর বই বিক্রি করে তাঁর কাছে জমা২৭০০ টাকা দিয়ে গৃহনির্মাণের কাজ শুরু করেন ৷

১৯০৯ সালে তিনি উদ্বোধন পত্রিকা ও শ্রীশ্রীমার বাসস্থানের জন্য বাড়ি তৈরির কজ সম্পূর্ণ হয় ৷

এর জন্য তিনি ১১০০০ অর্থ ধার করেন ৷

ধার পরিশোধের জন্য তিনি 'শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণলীলাপ্রসঙ্গ' লিখতে শুরু করেন ৷

প্রত্যহ অনেকক্ষণ ধ্যানজপ করবার পর তিনি লিখতে বসতেন ৷

তিনি যোগি


-পুরুষ ছিলেন ৷ না হলে উদ্বোধনের ঐ হৈ চৈ পরিবেশের মধ্যে মাথা ঠাণ্ডা রেখে ঐরূপ সুগভীর মহাগ্রন্থ রচনা সম্ভবপর ছিল না ৷

শ্রীমা  বলতেনঃ 'শরৎ হচ্ছে আমার ভারী ৷'

বলতেন ঃ 'আমার ভার নেওয়া কি সহজ ? শরৎ ছাড়া কেউ ভার নিতে পারে এমন তো দেখিনি ৷ সে আমার বাসুকি, সহস্রফণা ধরে কত কাজ করেছে, যেখানে জল পড়ে সেখানেই ছাতা ধরে ৷'

প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, দক্ষিণেশ্বরে শ্রীরামকৃষ্ণ একদিন পায়চারি করতে করতে সহসা যুবক শরতের ক্রোড়ে উপবিষ্ট হন ৷

কয়েক মুহূর্ত ঐভাবে থাকার পর তিনি উঠে যান ৷

উপস্থিত ভক্তদের ঐ সম্পর্কে কৌতূহল দেখে তিনি বলেছিলেন ঃ "দেখলাম, ও কতটা ভার সইতে পারবে ৷"

স্বামীজী রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সম্পাদকের দায়িত্ব অর্পণ করেছিলেন তাঁর উপর এবং তিনি সুদীর্ঘ ত্রিশ বৎসর কাল সঙ্ঘরূপী শ্রীরামকৃষ্ণ-শরীরের গুরুভার অসাধারণ নিষ্ঠার সাথে বহন করেছিলেন ৷

শ্রীমা সারদানন্দকে নিজের 'ভারী' বলে চিহ্নিত করে আনন্দ পেতেন কিন্তু তিনি মায়ের 'দ্বারী' বলে পরিচয় দিতে গৌরববোধ করতেন ৷ 

জয়রামবাটী থেকে শ্রীমাকে নিয়ে সেবক সারদানন্দ উদ্বোধন কার্যালয়ের নতুন বাড়িতে প্রবেশ করেন ১৯০৯ খ্রীস্টাব্দের ২৩ মে ৷

বস্তুত, ঐদিন থেকে উদ্বোধন কার্যালয়ের ভবনটি রামকৃষ্ণ-ভক্ত-মণ্ডলে 'মায়ের বাড়ি' বলে পরিচিত হয় ৷

অদ্যাবধি এই 'মায়ের বাড়ি' একাধারে শক্তিপীঠরূপে পরমতীর্থ এবং স্বামী সারদানন্দের অপূর্ব মাতৃসাধনার মহতী স্মৃতিসৌধ ৷





2.

🙏আজ শ্রীমৎ স্বামী সারদানন্দ জী মহারাজের  পুণ্য আবির্ভাব তিথি 🙏


দীর্ঘ কয়েক বছর ঠাকুর ও স্বামীজীর জন্মতিথিতে মঠে গান গাওয়া ছিল স্বামী সারদানন্দজী মহারাজের একটি অবশ্যকর্তব্য। ওই দিনে দিনে তিনি সাধারণত নির্দিষ্ট কয়েকটি গান গাইতেন, যেমন ঠাকুরের জন্মতিথিতে তিনি অবশ্যই গাইতেন - গিরিশচন্দ্র রচিত 'দুঃখিনী ব্রাহ্মণী কোলে কে শুয়েছ আলো করে'। তেমনি স্বামীজীর তিথিতে 'একরূপ অরূপ- নাম -বরণ'। 1912 খ্রিস্টাব্দে তিনি স্বামীজীর ঘরের বারান্দায় বসে প্রথম গেয়েছিলেন তানপুরা সহযোগে-' এক রূপ অরূপ নাম বরণ'। তারপর গেয়েছিলেন,' মুঝে বারি বনোয়ারী', 'তাথৈয়া তাথৈয়া নাচে ভোলা' এবং 'নাচে বাহু তুলে'। স্বামী সারদানন্দের  সুর শিল্পের সাধনা শুধু গাওয়াতে সীমিত ছিল না, তিনি একাধারে গায়ক-বাদক, গীত রচয়িতা এবং গীতশিক্ষক। অপরে গান গাইলে তিনি তবলা, পাখোয়াজ বাজাতেন।তাঁর রচিত সংগীতের মধ্যে বিশেষ সমাদৃত স্বামীজীর মহাসমাধির পর একটি গান -- 'স্তিমিত চিত সিন্ধু ভেদি উঠিল কি জ্যোতির্ঘন '-গানটিতে তিনি নিজেই সুর দিয়েছিলেন। সামগ্রিকভাবে দেখতে গেলে ভগবত প্রেমিক শিল্পী ছিলেন সত্য সুন্দরের সন্ধানী, তাঁর সাহিত্য, সঙ্গীত সবকিছুই ছিল তাঁর অধ্যাত্ম জীবনের অলংকার।


সারদানন্দ চরিত

স্বামী প্রভানন্দ

পৃষ্ঠা 306

2.

পূজনীয় শরৎ মহারাজ সাধারণত স্বল্পভাষী ছিলেন। ধর্ম বিষয়ে অতি জটিল সমস্যাও তিনি দুই এক কথায় অতি সরলভাবে বুঝাইয়া দিতেন, বোধ হয় তিনি নিজেও শ্রীশ্রীঠাকুরের নিকট ঐরূপ শিক্ষা পাইয়াছিলেন। তিনি একদিন আমাদিগকে বলিয়াছিলেন, “একদিন ঠাকুর আমাকে বলিলেন, অত শাস্ত্রাদি পড়িয়া কি হইবে ‘নাথ, তুমি সর্বস্ব আমার’ এই গানটির অর্থ বুঝিলেই সমস্ত হইয়া যাইবে। ঠাকুর তাল দিয়া নিজেই আমাকে এই গানটি শিখাইয়াছিলেন।”

- স্বামী সারদানন্দ 


নাথ! তুমি সর্বস্ব আমার। প্রাণাধার সারাৎসার 

নাহি তোমা বিনে কেহ ত্রিভুবনে বলিবার আপনার॥

তুমি সুখ শান্তি তুমি সহায় সম্বল সম্পদ ঐশ্বর্য জ্ঞান বুদ্ধিবল

তুমি বাসগৃহ আরামের স্থল আত্মীয় বন্ধু পরিবার॥

তুমি ইহকাল তুমি পরিত্রাণ তুমি পরকাল তুমি স্বর্গধাম

তুমি শাস্ত্রবিধি গুরু কল্পতরু অনন্ত সুখের আধার॥

তুমি হে উপায় তুমি হে উদ্দেশ্য তুমি স্রষ্টা পাতা তুমি হে উপাস্য

দণ্ডদাতা পিতা স্নেহময়ী মাতা ভবার্ণবে কর্ণধার॥

Plant Insulin in India

 In South India ,Bengal etc. A nice plant is seen at all our surroundings. This has got Anti Diabetic Role. Please find this article below.

https://europepmc.org/article/PMC/3931203



দক্ষিনেশ্বরী কালী

 দক্ষিণেশ্বর কালীমন্দিরে প্রতিষ্ঠিত দেবীর আসল নাম ‘জগদীশ্বরী’। কিন্তু রাণী রাসমণির গুরু উমাচরণ ভট্টাচার্য্য দেবীর নাম দিয়েছিলেন ‘ভবতারিণী’। তিনি একসময় নবদ্বীপের পোড়া-মা তলায় সাধনা করতেন। নিকটেই কালীমন্দির, অধিষ্ঠাতা দেবী ‘ভবতারিণী’।

উমাচরণ ভবতারিণীর সাধনা করেছিলেন। তিনি তাঁর আরাধ্যা দেবীর নামে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরাধিষ্ঠাত্রী দেবীর নামকরণ করেছিলেন ‘ভবতারিণী’। ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ এই নামটি রক্ষা করেছিলেন।

ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ যাকে মা বলে ডাকতেন, যাকে জল না খাইয়ে নিজে কিছু মুখে তুলতেন না সেই মা ভবতারিণীর মূর্তি তৈরি করেছিলেন কাটোয়ার দাঁইহাটের নবীন ভাস্কর।

১৮৫৫ সালে রানী রাসমণির ইচ্ছায় দাঁইহাটের বিখ্যাত ভাস্কর নবীন মা ভবতারিণীর মূর্তি তৈরি করেছিলেন। কোলকাতায় গিয়ে মাসাধিকাল ধরে হবিষান্ন খেয়ে নিষ্ঠা সহকারে মূর্তি তৈরির কাজ শেষ হলে, রাণী রাসমণির মন হল দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের গর্ভ গৃহের মাপে মূর্তি বেমানান হচ্ছে। রাণী ফের নবীন ভাস্কর কে আর একটু বড়ো করে মূর্তি তৈরীর বরাত দেন।

নবীন ভাস্কর মোট তিনটি মায়ের মূর্তি তৈরী করেন। তিনি পুনর্বার যে মূর্তিটি তিনি তৈরী করেন, সেটি রাণীর খুবই পছন্দ হয়। সেটিই ভবতারিণী কালী বলে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে পূজিতা এবং জগৎ বিখ্যাত হন।

ভবতারিণীর দু'বোন কৃপাময়ী ও ব্রহ্মময়ী। একই কোষ্ঠীপাথর থেকে তৈরি হয়েছিল ভবতারিণী, কৃপাময়ী আর ব্রহ্মময়ীর বিগ্রহ। সর্বপ্রথম তৈরি হয় মা কৃপাময়ীর মূর্তি। এরপর তৈরি হয় মা ব্রহ্মময়ী ও মা ভবতারিণীর বিগ্রহ।

প্রসঙ্গত এখানে বড় ছোটর হিসাব করা হয় বিগ্রহের উচ্চতার বিচারে। সেই অনুযায়ী ভবতারিণীর মূর্তি সবথেকে বড়। তাই সে বড় বোন। মেজ হলেন মা কৃপাময়ী ও ছোট বোন ব্রহ্মময়ী। এই তিন দেবী মূর্তির এই নামকরণও করেন একই মানুষ। তিনি স্বয়ং ঠাকুর শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংস দেব।

ভবতারিণী, কৃপাময়ী আর ব্রহ্মময়ী থাকেন বরাহনগরে। তিন বোনের বাড়িও একদম পাশাপাশি। ভবতারিণী আর কৃপাময়ীর বাস নদীর পারে। আর ব্রহ্মময়ী থাকেন কৃপাময়ীর থেকে ঠিক দশ মিনিট পায়ে হাঁটাপথ দূরে। ভবতারিণী হলেন দক্ষিণেশ্বরের কালী, কৃপাময়ী হলেন বরাহনগরের জয় নারায়ণ মিত্রর মন্দিরের কালী এবং ব্রহ্মময়ী হলেন কাশীপুরের প্রামানিক ঘাট রোডের কালী।

.

জয় মা 

.

   (সংগৃহীত)

Sadhak Totapuri

 https://blog.sridoctor.com/2021/01/14/%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%a7%e0%a6%95-%e0%a6%a4%e0%a7%8b%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%aa%e0%a7%81%e0%a6%b0%e0%a7%80/

Thursday, December 24, 2020

Jesus,RishiKrishna,Christ and Ramkrishna


Sri Ramkrishna and Sri Sri Sarada Ma. Pic-1.
Homa , Swami Vivekananda and 12 disciples. Pic-2




Sri Jesus or RishiKrishna or Christ. Pic -3.


 Avatar Sri Ramkrishna came to unite the All. He had Samadhi or Trance looking baby Jesus in the lap of Mother Merry.

There is a nice similarity between two words :Krishna and Christ. Both are  very similar to here. 'Krishna' if you utter it in a bit harsh voice it will be 'Khrishna'. 'Christ' , you write it 'Khrist' then see,'Khri' part are in both two words.

 Ramakrishna called Jesus Christ RishiKrishna and we , who are PostRamkrishnian Hindu, adore Jesus as one of the our Avatar like Hazarat Muhammad also. Today we think ourselves not only Bengali,not only Indian, but a  human. This whole mankind is our neighbours and all the world is a home.

"BOSUDHEVA KUTUMBAKOM" This is our Vedic teaching. This has evoluted in widest sphere after Sri Ramkrishna. Only the Hindu can think it so widely. No other religions in the world has so acceptance.  Whatever we do ins and out we remain Hindu. 

 There is a nice devotional similarity between the Ramakrishna,HIS the 12 disciples and  12 disciples of Jesus.Swami Vivekananda took their Sannyas  on the day just before 25th December remembering this Holy BirthDay of Sri Jishu  and they are also 12 in number.

In this context I like to mention that  in the1st January the  kalpataru utsav is celebrated in Ramkrishna mission and the western country follows the 31st December as a great festival for the end of the year and coming the new year. Both are Festival. But Sri Ramkrishna has given a new dimension for the Hindu's own festival on this date.

 Of late Sri Gurudev Swami Debananda Giri Maharaj is also celebrates the on the same date as Maha Milan Utsav.

So  Merry Christmas to you all .

I am offering my pranams and my respects to the Lotus feet of Lord Christ with His 12 disciples and also to Sri Ramakrishna and His 12 disciples, Who being a Bengalee , had crossed the boundaries of narrow religions. And adopted the Christ and His disciples as their own.

I have found a nice article in whatsapp regarding Swamiji's Sannyas.

I am pasting that for knowledge of the people.

আজ ত্যাগের সংকল্পে উদ্বুদ্ধ হওয়ার দিন। 1886 খ্রী:19শে ডিসেম্বর স্বামী বিবেকানন্দ তাঁর আট গুরুভাই সহ হরিপাল রেল স্টেশন থেকে পদব্রজে যাত্রা করেন আঁটপুরের উদ্দেশ্যে। 1886 খ্রী: ডিসেম্বর মাসে নরেন্দ্রনাথের গুরুভাই বাবুরামের মা শ্রীমতী মাতঙ্গিনী দেবী নরেন্দ্রনাথ ও অন্যান্য গুরুভাইদের আঁটপুর গ্রামে আমন্ত্রণ জানান।তাঁরা সেই নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে 1886 খ্রী:19শে ডিসেম্বর হরিপাল স্টেশন থেকে পদব্রজে আঁটপুর যান।

                         নরেন্দ্রনাথ,বাবুরাম,শরৎ,শশী,

তারক,কালী,গঙ্গাধর,নিরঞ্জন ও সারদা কিছুদিন আঁটপুরে থাকেন।আঁটপুরেই বড়দিনের পূর্বসন্ধ্যায় নরেন্দ্রনাথ ও আটজন ধুনি জ্বালিয়ে সন্ন্যাস গ্রহণের সংকল্প নেন।

                              1886 খ্রী: 24 শে ডিসেম্বর  (13 ই পৌষ 1293) আঁটপুর।সন্ধ্যা পেরিয়ে গেছে অনেকক্ষণ।বেশ রাত।তারা ভরা আকাশ।সামনে জ্বলছে ধুনি।ধ্যানে নিমগ্ন ন'টি যুবক।শ্রীরামকৃষ্ণের নয় ভক্ত।শেষ হল ধ্যান।শুরু হল ঈশ্বর নিয়ে আলোচনা।সেখানে মূল কথক অবশ্যই একজনই,বাকিরা শ্রোতা।যীশুখ্রীষ্টের জীবনকথা শোনালেন তিনি।অনেকের ত্যাগের মধ্য দিয়ে কীভাবে খ্রীষ্টধর্ম ও খ্রীষ্ট সম্প্রদায় ব্যাপকভাবে জগতে প্রসারিত হয়েছে তা শোনালেন।তিনি বোঝালেন,জগৎ কল্যাণে নিজেদের উৎসর্গ করতে হলে ত্যাগই বড় কথা।আর এর প্রথম ধাপ হল সংসার ত্যাগ।সৃষ্টি হল জগতের সর্বকনিষ্ঠ সন্ন্যাসী সম্প্রদায়ের যা জগতকে দেবে এক নবীন আদর্শ, 'আত্মোনো মোক্ষার্থং জগদ্ধীতায় চঃ'। নেতা বিবেকানন্দকে কেন্দ্র করে ন'জন গুরুভাই উঠে দাঁড়ালেন, ধুনির অগ্নিশিখাকে সাক্ষী রেখে সংকল্প করলেন মানুষের স্বার্থে সংসার ত্যাগ করবেন।সন্ন্যাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। নরেন্দ্রনাথ (বিবেকানন্দ),বাবুরাম (প্রেমানন্দ),শরৎ (সারদানন্দ),শশী(রামকৃষ্ণানন্দ),তারক (শিবানন্দ)কালী(অভেদানন্দ),নিরঞ্জন(নিরঞ্জনানন্দ),গঙ্গাধর (অখন্ডানন্দ) এবং সারদা(ত্রীগুণাতীতানন্দ)। 

   

জয় শ্রী গুরুমহারাজজী কী জয়!

Popular Posts